Date : 2024-03-29

“ওরা” ভালো আছে তো?

ওয়েব ডেস্ক: আপনি অটো করে কোথাও যাচ্ছেন। হঠাৎ দেখলেন অটোচালকের হাতে বড় বড় নখ, এবং শুধু তাই নয় তাতে সুন্দর করে লাগানো রয়েছে গোলাপি নেলপলিশ। এমন দৃশ্য দেখে চমকানোরই কথা। ঠিক এমনই একটি ঘটনার সম্মুখিন হল মুম্বইয়ের পুনম খিনচি। তার রোজকার যাতায়াতের পথে গন্তব্যে পৌঁছতে অটোই একমাত্র ভরসা। যাওয়ার পথে এরকম একটা দৃশ্য দেখে বেশ অবাকই হয়েছিল পুনম। তবে কিছু না ভেবেই, সেই অটোচালকের উদ্দেশ্যে সোজা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় সে।

জিজ্ঞেস করে, ‘ হাতে বড় বড় নখ কেন’? হঠাৎ এমন প্রশ্নে একটু অপ্রস্তুতে যান অটোচালক। একটু লজ্জাও পান বোধহয়। তাই গলার স্বরে কিছুটা আড়ষ্ঠতা নিয়েই উত্তর দেন, ‘ঈদের জন্য তৈরি হচ্ছি দিদি’। সেই অটোচালকের সঙ্গে গল্প করতে শুরু করে দেয় পুনম। জানতে পারে যে তিনি হলেন একজন রূপান্তরকামী মহিলা। আর বাকি পাঁচজন মেয়ের মতোই তারও তো সাজতে ইচ্ছে করে।

আবার সামনেই ঈদ। তাই মনের ভেতরের সেই সুপ্ত চেতনাকে লুকিয়ে রাখেনি মঞ্জু। সাজিয়ে নিয়েছে নিজের নখকে নেলপলিশ দিয়ে। প্রায় ৫ বছর ধরে মুম্বই শহরে অটো চালাচ্ছেন মঞ্জু। তবে এর আগে কাজ করতেন একটি হোটেলে, কিন্তু সেখানে লিঙ্গ নিয়ে অনেক কটুক্তির মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে। সেই কারণেই মঞ্জু আর দেরি করেনি চাকরিটা ছাড়তে। তারপর থেকে অটো চালিয়েই দিন চলে মঞ্জুর। তবে রাত ১১টার পরে অটো চালাতে পারে না সে।

শিক্ষকতা, সংসার সামলে এবার তৃতীয় লিঙ্গের বিশ্ব সুন্দরীর দৌড়ে অ্যানি

কারণটা তো সবারই জানা। রাত বাড়লেই ছেলেদের নানান অশালীন মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাকে। তবে কোনো কিছুর তোয়াক্কা করে না মঞ্জু। সে শুধু স্বাধীনভাবে নিজের মতো বাঁচার স্বপ্ন দেখে। মঞ্জু মুম্বইতেই তার প্রেমিকের সঙ্গেই দিব্যি দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন।

সুপ্রিম কোর্টে রূপান্তরকামী, সমকামীদের সমাজে স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার দিলেও, সমাজ কী আদৌ মেনে নিতে পেরেছে? মনে হয় না। আর সেই কারণেই হয়তো আজও সবার নজর থেকে বেঁচে থাকতে হয় তাদের। কিন্তু কতদিন এইভাবে সমাজের থেকে পালিয়ে বেড়াতে হবে ওদের? সমাজ কি কোনোদিন সাবালক হবে না? এমন ঘটনাই বার বার প্রশ্নের মুখে ফেলবে সমাজকে। তাবেই যদি সম্বিত ফেরে।