ওয়েব ডেস্ক: তিন দিক সমুদ্র বেষ্টিত দেশ ভারতের উত্তরভাগ জুড়ে আছে হিমালয় পর্বত। হিমালয়ের সর্বচ্চো শৃঙ্গ মাউন্ড এভারেস্টের শিখরে পৌঁছে গেছিলেন তেনজিন নরগে এবং এডমন্ড হিলারা, এরপর অসংখ্য পর্বতারোহী জয় করেছিলেন এভারেস্ট। অথচ এর থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত কৈলাশ পর্বত যাকে হিন্দুদের মহান তীর্থ হিসাবে মনে করা হয়।
সেখানেই নাকি বাস স্বয়ং মহাদেবের। পুরাণকাল থেকেই কোন এক রহস্যজনক কারণে কেউ পৌঁছতে পারেনি কৈলাশের চূড়ায়। অথচ এই পর্বত এভারেস্টের থেকে প্রায় ২,২০০ মিটার নিচু। ছটি পর্বতশ্রেনী চীন তিব্বত সীমান্তে কৈলাশ পর্বতকে ঘিরে আছে পদ্মফুলের মতো। ২২ হাজার ফুট উঁচু এই পর্বত কালো পাথরে তৈরি। দূর থেকে কৈলাশ পর্বত দেখলে মনে হবে মিশরের পিরামিডের মতো স্তর বিশিষ্ট। কিন্তু কোন পর্বতমালা কি এমন নিখুঁত স্তর বিন্যাসে সৃষ্টি হতে পারে?
অনেকের মতে এই পর্বতের আরোহন করার চেষ্টা করলেই প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝা শুরু হয়। এই পর্বতের ভিতরে নাকি রয়েছে দুটি শহর সাম্বলা ওর আগর্থা। কৈলাশের দিকে কিছুদূর এগোনোর পরেই অদ্ভুত ভাবে পর্বতারোহীদের দিকে ধেয়ে আসে বরফের বোল্ডার। এমনকি কোন যন্ত্রকেও আজ পর্যন্ত পাঠানো সম্ভব হয়নি পর্বতের চূড়ায়। অনেকের মতে এই পর্বতের উপরে পৌঁছতে দেয়না হিন্দুরাই। কারণ তারা এই স্থানকে পবিত্র মনে করে, এবং কোন বিশেষ কারণে কৈলাশে উঠতে গেলেই বাধা দেওয়া হয়।
কিন্তু এমন বক্তব্যেরও কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া যারা কৈলাশ পর্বতে ওঠার চেষ্টা করেছেন তাদের শরীরে এসেছে অকাল বার্ধক্য। অদ্ভুত ভাবেই মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন : মরুভূমির বুকে দাঁড়িয়ে আছে জনশূন্য ফিল্ম সিটি
মাথার চুল হাতের নখ বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক গতিতে। প্রাচীন হিন্দু ধর্মগ্রন্থে লেখা আছে সমগ্র পৃথিবীর ভরকেন্দ্র কৈলাশ। রুশ বিজ্ঞানীদের মতে, কৈলাশ পর্বত একটি অ্যাক্সেসের মতো, তাঁদের মতে এই পর্বতের অভ্যন্তর ফাঁপা। এখানেই রাখা আছে অসংখ্যমূল্যবান বস্তু। অনেকের মতে ক্রিস্টাল কথাটি থেকে উৎপত্তি হয়েছে কৈলাশের।
তিব্বতী ধর্মগুরু রিনপোচেই নাকি একমাত্র কৈলাশে পৌঁছতে পেরেছিলেন তবে তিনি সেখান থেকে ফিরে কৈলাশ সম্পর্কে কেন কথা বলেননি। অনেক রাতে কৈলাশের দিকে তাকালে মাঝে মাঝেই তার চারপাশে আলো দেখা যায়। কৈলাশ থেকে এই আলো মিলিয়ে যায় মানস সরোবরের বুকে। সম্পূর্ণ রেডিও অ্যাক্টিভ জোন কৈলাশ। ১৪ হাজার ফুট উঁচুতে একমাত্র মানস সরোবরই হল মিষ্টি জলের হ্রদ।
ঠিক তার পাশেই আছে আশান্ত রাক্ষস তাল, যার জল তীব্র নোনতা। একটি হ্রদের আকৃতি গোলাকার অন্যটি অর্ধচন্দ্রের মতো। ঠিক যেন চন্দ্র ও সূর্যের অবস্থান। পাহারের বুকে আলো ছায়ার খেলায় গড়ে ওঠে বিভিন্ন মূর্তির অবয়ব। কখনও স্বস্তিক চিহ্ন কখনও স্বয়ং মহাদেবের মুখ ভেসে উঠতে দেখা গেছে কৈলাশের বুকে।