ওয়েব ডেস্ক: রাত পোহালেই শুরু হবে পূণ্যস্নান। সেই উপলক্ষে গঙ্গাসাগরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন অসংখ্য সাধুসন্তরা। সূর্যোদয়ের আগেই সাগরের জলে ডুব দিয়ে পূণ্য অর্জন করতে তৈরি হচ্ছেন সকলেই। লাখো লাখো মানুষের ভিড়ে সুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে তৎপর প্রশাসন। এদিকে পৌষ শেষ হলেও এখনই হাঁড় কাঁপানো শীতের হাত থেকে রক্ষা নেই বঙ্গবাসীর। শীতের আমেজ কাটাতে পিঠের আঁচে রসনাতৃপ্তী করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বাঙালির ঘরে ঘরে। নতুন চালের গুঁড়ো, নলেন গুড়ের পাকে জিভে জল আনা পিঠের খেতে কার না ভালো লাগে। কিন্তু বাংলার পিঠে তৈরির ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত রয়েছে লোকসংস্কৃতি ও নান্দনিকতা।
মুখরোচক খাদ্য হিসেবে বাঙালী সমাজে বিশেষ আদরণীয়। এছাড়াও, আত্মীয়-স্বজন ও মানুষে-মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনকে আরো দৃঢ় ও মজবুত করে তুলতে পিঠা-পুলি আয়োজনের উৎসব সবিশেষ ভূমিকা পালন করে। পিঠা যে শুধুই শীতের খাবার তা নয়। ইচ্ছে করলে সারা বছরই পিঠা বানিয়ে নিতেই পারেন। এখন অবশ্য পৌষ সংক্রান্তিতেও পিঠা তৈরির চল অনেকটাই কমেছে।
তাই মিষ্টির দোকানে পিঠা তৈরি করা হয়। বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মিষ্টান্নটি ঘিরে গ্রাম-বাংলায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। নবাব আমলে বাংলায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ রকমের পিঠা তৈরির প্রচলন ছিল। নতুন চালের গুঁড়ো দিয়ে মাটির পাত্রে, জলে ভাপিয়ে সুস্বাদু পিঠে তৈরি করা হত।
সেকালে পিঠের স্বাদের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল পিঠার নকশা। পুলি পিঠার উপরে তৈরি নকশাই ছিল পিঠার আভিজাত্য বিস্তারের একমাত্র হাতিয়ার। অনেক মোগল রাজারা পিঠার কারিগরদের সম্মান করতেন শুধুমাত্র তাদের বৈচিত্র্যময় পিঠার জন্য। তাদের পিঠার গায়ে রাজ্যের ইতিহাস, ঐতিহ্য কিংবা চমৎকার প্রাকৃতিক নকশা তৈরি করা হত।
পুলি পিঠা নকশা করার জন্য সুবিধাজনক। পিঠাতে নকশা আঁকার জন্য খেজুরের কাঁটা, বাঁশ ব্যবহার করা হত। এই শিল্পের তেমন কোন বিস্তার না থাকলেও তোমরা তোমাদের নানি-দাদিকে নকশি পুলি বানাতে বলে পিঠার স্বাদ ও সৌন্দর্য দুই উপভোগ করতে পার। মকর সংক্রান্তির পিঠার উৎসব এখন অনেকটাই ম্নান। চেনা স্বাদের অচেনা হয়ে যাওয়া জন্য দায়ী কি তবে কর্ম ব্যস্ততা?