ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক: বেয়াইনি নির্মান বন্ধ করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে শুধু সরকারি বিধি নিষেধ তৈরি করে কিছু হবে না। আগে রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে কি না সেটা দেখুন, রাজ্যের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানমের।
তিনি বলেন, যে সব এলাকায় দিনের পর দিন বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে সেখানকার জনপ্রতিনিধি তার কিছুই জানেন না এটা হতে পারে না। এমন প্রতিনিধিদের পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। শুধু সরকারি অফিসারদের দোষ দিয়ে বা তাদের শাস্তি দিয়ে এই সমস্যার কোনো সমাধান নেই। রাজনীতিকদের আগে সৎভাবে এই বেআইনি বন্ধ করার ইচ্ছে দেখাতে হবে। স্পষ্ট অবস্থান প্রধান বিচারপতির।
রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে আপনারা আপনাদের কেএমসি(KMC) হেড অফিসের সামনে থেকে বেআইনি হকার সরাতে পারেন নি। আপনাদের নেতারা সব জেনেও চুপ থাকেন। যেমন বিধাননগর পুরসভা। তারা বেআইনি নির্মাণ ভাঙার বদলে হাত তুলে নিলো, বাসিন্দাদের বিক্ষোভের কথা বলে। আবার ও বলছি রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুব জরুরি।
গার্ডেনরিচের বহুতল ভাঙার মামলায়
বেয়াইনি নির্মান রুখতে রাজ্য কি পদক্ষেপ করছে সে ব্যাপারে দুসপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চের।
একইসাথে বেয়াইনি নির্মান সংক্রান্ত মামলার শুনানি করার জন্য হাইকোর্টে আলাদা কোনো ডিভিশন বেঞ্চ তৈরি করা যায়কিনা সে বিষয়ে আদালত বিবেচনা করবে বলেও জানালেন প্রধান বিচারপতি।
গার্ডেনরিচের ঘটনায় মৃতদের ৫ লক্ষটাকা পর্যন্ত ক্ষতিপুরন দেওয়া যাবে বলে নির্দেশ প্রধান বিচারপতির।একইভাবে আহতদের ১.৫০ পর্যন্ত ক্ষতিপুরন দেওয়া যাবেনা জানালো ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, গার্ডেনরিচের ঘটনায় আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। গোটা রাজ্যে একইরকম অবস্থা। বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে অন্তত ২০০ টি মামলা রয়েছে। হাইকোর্টের উচিত এই বিষয়টি স্বতপ্রনোদিত মামলা হিসাবে গ্রহণ করা। বিচারপতি সিনহা ও সৌগত ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ তৈরি করে মামলার শুনানি করার আর্জি।
কলকাতা পুরসভার(KMC) আইনজীবী জয়দীপ কর কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানাতে গেলে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, কোথাও বহুতল ভেঙে পড়ে ১০জন মারা গেলাও, তারপর প্রশাসন জানালো তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের আবার কয়েকদিন পরে জামিন হয়ে গেছে। আক্রন্তদের ক্ষতিপুরন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ফের নতুন প্লট খুঁজে প্রোমোটর বেয়াইনি নির্মান করছে তাহলে আখেরে হচ্ছে কি?পুরসভার আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি – আপনারা আপনাদের অফিসারদের আরো সক্রিয় করুন,তাদের ক্ষমতাবৃদ্ধি করুন।
বেয়াইনি নির্মান বন্ধ করার বিষয়ে রাজ্যের ভুমিকার কড়া সমালোচনা প্রধান বিচারপতির।মুলত বিধাননগর ও কলকাতা পুর এলাকায় যেভাবে পুকুর বা জলাশয় ভরাট করে বেয়াইনি নির্মান হচ্ছে সে ব্যাপারে প্রশাসন কোনো কঠোর পদক্ষেপ করছে না বলেই মনে করে আদালত। লোকাল রাজনৈতিক নেতাদের সমর্থন না থাকলে এই ধরনের বেয়াইনি নির্মান তৈরি সম্ভব নয় বলেও জানালেন প্রধান বিচারপতি।
আরো পড়ুন: এই গরমে এসি ও ফ্যান একসঙ্গে চালাচ্ছেন? এরফল কি জানেন?