প্রবীর মুখার্জি, সাংবাদিকঃ জ্যৈষ্ঠ মাসের মঙ্গলবার পালন করা হয় ‘’ জয় মঙ্গলবার।‘’ ঠিক কবে থেকে এই ব্রতটি বাঙালীর ঘরে পালিত হয়ে আসছে, তা জানা নেই। এখন শহরে এই ব্রত পালনের ধূম খুব একটা চোখে না পড়লেও গ্রাম-গঞ্জে যথেষ্ট ধূম-ধামের সঙ্গেই এই ব্রতটি ফি-বছর পালন করা হয়ে থাকে। সাধারণত মহিলারাই এই ব্রত পালন করে থাকেন। সে কুমারী হোক বা বিবাহিতা। পারিবারিক রীতি মেনে অনেকে জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রতি মঙ্গলবারই এই ব্রত পালন করে থাকেন। তবে অনেকে আবার শুধু মাত্র প্রথম ও শেষ মঙ্গলবারও পালন করে থাকেন এই ব্রত।
আগেরদিন নিরামীষ আহার করে মঙ্গলবার সকাল থেকে উপবাসে থেকে এই ব্রত পালন করেন। এই ব্রত পালনের জন্য বিশেষ কিছু খরচেরও প্রয়োজন হয় না। কাঁঠাল পাতায় দূর্বা-ধান-যব-এবং মুগ কলাই রেখে পানের মতো খিলি তৈরি করা হয়। এই দিন পাঁচটি গোটা ফল দিয়ে যে কোনও কালী মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে থাকেন মহিলারা। সঙ্গে অবশ্যই থাকে ওই কাঁঠাল পাতা দিয়ে তৈরি খিলি। এছাড়া ফুল-বেলপাতা তো আছেই। বিশেষ করে লাল জবা । এই দিন মা কালীকে চন্ডী রূপে আরাধনা করা হয়ে থাকে। আমলা বাটা ও হলুদ দিয়ে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে স্নান করানো হয়। অনেকে এরপর অঞ্জলীও দিয়ে থাকেন। আসলে দুর্গারই আর একটা রূপ । তাই শক্তিমন্ত্রেই পুজিতা হন দেবী। এরপর ব্রতকথা পড়ে থাকেন ঠাকুরমশায়, যা শোনের ব্রতপালনকারীণীরা।
দেবীকে নিবেদন করা হয় ওই পাঁচটি গোটা ফল। সঙ্গে মিষ্টিও দেন কেউ। ওই খিলিটি একটি কাঁঠালি কলার মধ্যে পুরে দিয়ে গিলে খেতে হয়। দুপুরে সাধারণত চিঁড়ে-দৈ-ফলই আহার করেন ব্রতপালনকারীরা। আর রাত্রে ফলাহার। গরমকালে এই ব্রত পালিত হয় বলে ফলেরও অভার হয় না খুব একটা। আম-জাম-কাঁঠাল-কলা-লিচু-তালশাঁস তো সহজলভ্য। তবে দাম একটু বেশি পড়তে পারে। ব্রতকথায় বর্ণিত আছে, এই ব্রত পালন করলে সকল বিঘ্ন নাশ হয়। সকলা বাধা-বিপত্তি কেটে গিয়ে সুদিন আসে। তাই এই ব্রত আজও পালিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন : সোমবার ভোট। বন্ধ করে দেওয়া হলো বনগাঁ সীমান্ত