নির্বাচন কমিশন একটি স্বশাসিত স্বতন্ত্র সংস্থা। নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করাই তাদের কাজ। প্রথম পাঁচ দফা সেই কাজ সফলভাবে করলেও ষষ্ঠ দফা থেকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এর দফতর। শুধু তাই নয়, সিইও দফতরের কোনো কোনো কর্মী প্রতিদিন রাত্রে রাজ্যের শাসকদলের মন্ত্রীদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করছেন। এমনই মারাত্মক অভিযোগ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ী।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের কিছু অফিসারদের নিয়ে বিষ্ফোরক অভিযোগ জানালো সিপিএম। বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ জানানোর মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করতে আসনে শমীক লাহিড়ী, রবীন দেব, সুখেন্দু পানিগ্রাহী। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয় নি। তারপরেই এই বিষ্ফোরক অভিযোগ জানান শমীক লাহিড়ী।
শনিবার শেষ দফার ভোটের দুই দিন আগে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করতে আসেন সিপিএমের একটি প্রতিনিধি দল। দলের পক্ষ থেকে শমীক লাহিড়ী অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের সঙ্গে বৈঠক করার সময় যখন আমরা নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ জানাই তখন উনি (সিইও) বলেন যে এইসব অভিযোগ তিনি আগে পান নি। আমরা জানাই সব অভিযোগই আপনার দফতরে আমরা জমা দিয়েছি। আপনাকে কেন সেই অভিযোগগুলো দেওয়া হয় নি সেটা আমরা জানি না।” সূত্রের খবর এইসময় প্রতিনিধিদলের সদস্য সুখেন্দু পানিগ্রাহী-র সঙ্গে কিছুটা বিতন্ডা হয় সিইও আরিজ আফতাবের। তারপরেই তিনি (সিইও) বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। এরপর প্রায় এক ঘন্টা ফাঁকা ঘরে বসে অপেক্ষা করেন শমীক লাহিড়ী, রবীন দেবরা। পরে রবীন দেব বলেন, “আমি ওনাকে ফোন করেছিলাম, কিন্তু উনি ফোন ধরেন নি। টেক্সট করে বলেছিলাম আমরা আলোচনা করতে চাই, অপেক্ষা করছি। কিছুক্ষণ পর তিনি টেক্সট এর উত্তর দিয়ে বলেন তিনিও আলোচনায় রাজি। তবে কবে বা কখন সেই প্রশ্নের উত্তর আর উনি দেন নি।”
এদিকে শমীক লাহিড়ী পরিষ্কার অভিযোগ করে বলেন, “আমরা একঘন্টা ধরে বসে আছি, আর সিইও মিটিং এর মধ্যেই উঠে চলে গেলেন।” তিনি আরও অভিযোগ করেন “আমাদের সন্দেহ এই দফতরে এমন কিছু লোক আছেন যারা আমাদের চিঠি সিওর কাছে পৌঁছে দিচ্ছে না।” এরপরই বিস্ফোরক অভিযোগ করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ী বলেন, “মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এর দফতরের কর্মী প্রতিদিন রাত্রে গোপনে রাজ্যের শাসকদলের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।” তাঁর আরও অভিযোগ পঞ্চায়েত ভোটের কায়দায় লোকসভা ভোটের গণনাতেও কারচুপি করতে চাইছে। শেষ দুই দফার ভোট রাজ্যের শাসকদলের গড় এলাকায়। তাই কি বিজেপির নির্দেশে ইসিআই (ইলেকশন কমিশন অব ইন্ডিয়া)এর বার্তা পেয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর এমন পক্ষপাতিত্ব করছে ? প্রশ্ন তুলেছেন শমীক লাহিড়ী। পাশাপাশি তাঁর দাবি পাটুলি, রাজা বাগান ও কালিঘাট থানার ওসি কে সরাতে হবে।
সিপিএমের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয় নি। প্রতিক্রিয়া পেলে পরে আপডেট করা হবে
আরও পড়ুন : বইয়ের বদলে PDF, সিদ্ধান্ত সংসদের