সবে মিটলো লোকসভা ভোট। তবে এরমধ্যেই পরের আরেকটি ভোটের জন্য তৈরি হতে হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোকে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুজোর আগেই রাজ্যের দশটি বিধানসভা আসনে পুনর্নির্বাচন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- এবারের লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যের বেশকিছু বিধায়ককে প্রার্থী করেছিলো তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। তাঁদের কেউ কেউ লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন আবার কেউ আরও বড় দায়িত্ব পেয়ে বিধানসভা ছেড়ে লোকসভায় যাচ্ছেন। এই দশটি আসনের মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার কেন্দ্র থেকে জয়ী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র সিতাই থেকে পদত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি বিজেপির মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গাও আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। তাঁকেও তাঁর বিধানসভা আসন থেকে পদত্যাগ করতে হবে। উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ লোকসভায় জোড়াফুলের প্রার্থী হয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যানী। তিনি ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম চিহ্ন নিয়ে রায়গঞ্জ বিধানসভায় জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। কৃষ্ণ কল্যানী ছাড়া বাগদা বিধানসভা থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হওয়া বিশ্বজিৎ দাস বা রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পদ্ম চিহ্নে জয়ী হওয়া মুকুট মনি অধিকারী লোকসভা নির্বাচনে জোড়া ফুলের প্রার্থী হয়েছিলেন যথাক্রমে রায়গঞ্জ, বনগাঁ ও রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে। লোকসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে এই তিনজনই তাঁদের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। ফলে এই তিন কেন্দ্রেও উপনির্বাচন হবে। প্রসঙ্গত সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দলবদলু এই তিনজনই পরাস্ত হয়েছেন শুধু নয়, তাঁরা তাঁদের নিজেদের বিধানসভা কেন্দ্রেও পিছিয়ে রয়েছেন প্রচুর ভোটে। এছাড়া সংসদে যেতে হলে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে আরও চার বিধায়ককে। এই চারজনই রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক। এনারা হলেন মেদিনীপুর কেন্দ্রের জুন মালিয়া, নৈহাটি কেন্দ্রের পার্থ ভৌমিক, হাড়োয়া কেন্দ্রের হাজি নুরুল ইসলাম ও তালডাংড়া বিধানসভার অরুপ চক্রবর্তী। শাসক দলের এই চার বিধায়ক যথাক্রমে মেদিনীপুর, ব্যারাকপুর, বসিরহাট ও বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে জয়ী হয়ে সংসদে যাচ্ছেন। এরমধ্যে হাজি নুরুল আগেও (২০১৪ সালে) সাংসদ হয়েছেন। এঁদেরকেও বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ফলে এই নয়টি আসনে আগামি ছয় মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। আর কলকাতার মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তণ মন্ত্রী সাধন পান্ডের মৃত্যুর পর থেকে আসনটি খালি পড়ে রয়েছে। কোর্টে একটি কেস চলার জন্য এই কেন্দ্রে এতদিন ভোট করাতে পারেনি কমিশন। তবে সম্প্রতি কল্যান চৌবে (২০২১ সালে এই মানিকতলা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী) তাঁর মামলা (অন্যায়ভাবে, কারচুপি করে তাঁকে হারানো হয়েছে বলে মামলা করেছিলেন) প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এই কেন্দ্রে ভোট করাতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আর কোন বাধা নেই। ফলে সব মিলিয়ে রাজ্যের এই দশটি আসনে আগামি ছয় মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করা হবে বলেই কমিশন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন : NDA বৈঠকের আগে সংসদের গেটে গ্রেফতার ৩