কথা ছিল মেয়ের জন্মদিন পালন করবেন বাবা। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস! অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস থেকে আর হাসিমুখে বাড়ি ফেরা হলো না বাবার মেয়ের জন্মদিনের আগেই মেয়েকে ফেলে চিরতরে হারিয়ে গেলেন বাবা।
সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: মেয়ের জন্মদিন পালন করতে তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন কলকাতার বালিগঞ্জের দামিনী লেনের শুভজিৎ মালি। তৎকাল টিকিট কেটে উঠে পড়েছিলেন ট্রেনে। কিন্তু মেয়ের জন্মদিন আর পালন করা হলো না। বদলে এলো তার মৃত্যু সংবাদ।
সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন দুই সন্তানের বাবা। মেয়ের জন্মদিনের আগেই বাবার মর্মান্তিক পরিণতিতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। মূলত গাড়ির ডেলিভারির কাজ করতেন শুভজিৎ। শুক্রবার শিলিগুড়িতে গিয়েছিলেন কাজের সূত্রেই। কয়েকদিন পরে ফেরার কথা থাকলেও সোমবারই রওনা দেন মেয়ের আবদার মেটাতে। আর সেই দুর্ভাগ্যই মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিল না।
এই ভয়াবহ খবর তার বাড়িতে এসে পৌঁছনোর পরেই জামির লেনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শুভজিতের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী মিঠু, দুই মেয়ে যাদের একজনের বয়স ১১ বছর তার নাম সৃষ্টি এবং দেড় বছরের ছেলে শিবম। এছাড়াও রয়েছেন বাবা-মা, দাদা-বৌদি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর আসার পরেই ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছেন দাদা সুরজিৎ। সঙ্গে গিয়েছেন খুড়তুতো ভাই অজয় মালি এবং পাড়ার এক যুবক। শুভজিতের বৌদি জানিয়েছেন, ‘‘আজ মেয়ের জন্মদিনের জন্য কেক নিয়ে বাড়িতে আসার কথা ছিল শুভজিতের। কিন্তু সেটা আর হল না”।
সৃষ্টিরই জন্মদিনের জন্য ফিরছিলেন তিনি। তার জন্য বাড়িতে পাঁচ রকম ভাজা এবং ভাত রান্না করা হয়ে গিয়েছিল। আরও রান্নার তোড়জোড় হচ্ছিল তবে এই দুঃসংবাদ আসার পরে সব বন্ধ হয়ে যায়। স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পরে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই তার স্ত্রী মিঠু।
একটা করে এক্সিডেন্ট এরকম কত পরিবারকে ভাসিয়ে দিয়ে চলে যায়। জীবন তার নিজের নিয়মে চলে তবে ছন্দ হারিয়ে যায় পরিবারগুলোর মানুষগুলোর।
আরও পড়ুন : ফের ট্রেন দুর্ঘটনা, ফিরে এল বাহানাগার স্মৃতি