ভারতীয় ন্যায় সংহিতা সংক্রান্ত তিনটি আইন কার্যকর হতে চলেছে আগামি ১ জুলাই’২০২৪ থেকে। কঠোর এই আইন আপাতত কার্যকর না করার জন্য আবেদন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী কে লেখা এটাই প্রথম চিঠি। মূলতঃ “ভারতীয় ন্যায় সংহিতা,২০২৩”, “ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম, ২০২৩”, এবং “ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা,২০২৩”, এই তিনটি আইন নিয়ে আগেও নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ– রাজ্যের দাবি হোক বা জাতীয় কোনো বিষয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত দশ বছরে একাধিক চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কে। গত ৯ জুন তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর ফের একবার তাঁকে চিঠি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অবশ্য রাজ্যের দাবি সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে নয়। মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখেছেন জাতীয় একটি বিষয় নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী কে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, গত বছর ডিসেম্বর মাসে বিরোধী সাংসদদের সংসদ থেকে বের করে দিয়ে জোর করে এই আইন তিনটি পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীর মতে একত্রে ন্যায় সংহিতা সংক্রান্ত এই তিনটি আইন সাধারণ মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী। এই বিষয়ে সংসদে আরও অনেক বেশি আলোচনার প্রয়োজন। কঠোর এই আইন প্রণয়ন করার আগে নতুন করে সব দলের মত নেওয়া হোক বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর কথায়, সদ্য নতুন সভা গঠিত হয়েছে। এই আইন তিনটি কার্যকর করার আগে অষ্টাদশ লোকসভার মত আরও একবার নেওয়া উচিৎ বলেই তিনি মনে করেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি আবেদন করেছেন এখনই (১ জুলাই থেকে) আইন তিনটি কার্যকর না করে কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হোক। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী কে জানিয়েছেন যে গত বছর এই একই বিষয় নিয়ে তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (বর্তমান মন্ত্রিসভাতেও তিনিই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) পরপর দু’বার চিঠি লিখেছিলেন। প্রথমে ২৯ নভেম্বর ও তারপর ১৬ ডিসেম্বর।
কিন্তু তাঁর চিঠিকে কোনো গুরুত্ব না দিয়েই গত বছর ২০ ডিসেম্বর একপ্রকার গায়ের জোরেই এই বিলটি সংসদে পাশ করানো হয়। এটা শিষ্টাচার বিরোধী বলেই মত মমতার। চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কে তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আবেদন, দেশের সংবিধান, দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা বজায় রাখার জন্য এই তিনটি বিল নিয়ে পুনরায় ভাবুক কেন্দ্র এবং পুনরায় সংসদের উভয় কক্ষে (লোকসভা ও রাজ্যসভা) বিল তিনটি নিয়ে আলোচনা করা হোক। তারপর সকলের মত নিয়েই আইনগুলি কার্যকর করা হোক। এখন দেখার বিষয় ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেত্রীর লেখা এই চিঠির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কি সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুন : চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে বেদখল হটাতে কড়া বার্তা দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা