পরিবেশ বাঁচাতে গাছের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকবার দলীয় নেতা কর্মি সহ জনপ্রতিনিধিদের কাছেও আবেদন করেছেন যাতে সকলেই গাছ লাগানোর বিষয়ে উৎসাহি হয়। বন দফতরের পক্ষ থেকে নিয়ম করে প্রতিবছর অরণ্য সপ্তাহ পালন করা হয়। এবারের অরণ্য সপ্তাহে বিধায়কদের কাছে দফতরের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিলো যাতে তাঁরা তাঁদের এলাকার জন্য গাছ নিতে চাইলে দফতর সেই গাছ সরবরাহ করবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্যের দুই মন্ত্রী সহ মাত্র ছয় জন বিধায়ক এই গাছের জন্য দফতরের কাছে আবেদন করেছেন। যা খুবই হতাশাজনক বলেই মনে করছে বন দফতর।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- এবছর ১৪ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত অরণ্য সপ্তাহ পালন করা হয়েছে সারা রাজ্য জুড়ে। এবছর বন দফতরের পক্ষ থেকে বিধায়কদের কাছে বলা হয়েছিলো যদি কেউ নিজেদের এলাকার জন্য গাছ চান, তাহলে চিঠি দিলেই সেই গাছ তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে রাজ্যের বন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা কিছুটা খেদের সঙ্গে জানান, এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছে এই গাছ পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন মাত্র ছয় জন। এরমধ্যে দুইজন মন্ত্রী রয়েছেন। বাকি তিনজনই শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক। বিজেপির কোনো বিধায়ক এখনও এই গাছ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন নি বলেই জানান তিনি। তবে মাননীয় মন্ত্রী এটাও জানান, এই সংখ্যা (যে কয়জন আবেদন করেছেন) তাঁর কাছে এসে পৌঁছেছে। হয়তো ডিএফও (District Forest Officer)-র কাছে আরও আবেদন জমা পড়েছে। সেই সংখ্যা পরে জানা যাবে। বনমন্ত্রী বলেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী এরাজ্যে একজন শিশু জন্ম নিলে তার জন্য ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পে একটি করে গাছ দেন। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী গাছ লাগানোর জন্য সকলকেই উৎসাহিত করেন, সেখানে কেন এখনও আরও বেশি আবেদন এলো না সেটা অজানা। যে দুই মন্ত্রী গাছের জন্য আবেদন করেছেন এবং ইতিমধ্যেই গাছ নিয়ে নিজের এলাকায় লাগানোর ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা হলেন পূর্ত দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় ও খাদ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী জোৎস্না মান্ডি।
গাছ নিতে কেন অনীহা! এই বিষয়ে রাজ্যের এক মন্ত্রী জানালেন যে গাছ নিলাম, তার একটা সেলফি তুললাম, আর তারপর সেই গাছের বিষয় ভুলে গেলাম। এটা ঠিক নয়। গাছের পরিচর্যাও করতে হবে। সেটাই অনেকে করেন না বা গাছ লাগানোর পর আর খোঁজ খবরও রাখেন না। এইটা আটকাতে হবে। তাই এবার বন দফতর ঠিক করেছে যাঁরা গাছ নেবেন তাদের সেই গাছ পরিচর্যার বিষয়ে বন দফতরই সাহায্য করবে। তবে এক্ষেত্রে একটি সমস্যার কথা জানা গেল। বনমন্ত্রী বলেন, আগে এই গাছ লাগানোর কাজে একশো দিনের কর্মিদের কাজে লাগানো হতো। তারাই গাছ লাগানো থেকে শুরু করে তার পরিচর্যার দিকেই নজর দিতো। কিন্তু এখন একশো দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র আটকে রাখার ফলে এই কাজে একশো দিনের কর্মিদের আর কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ফলে সেটাও কিছুটা সমস্যায় ফেলেছে।
আরও পড়ুন : সবকিছু একই আছে, শুধু চিয়ারলিডার এর সংখ্যা কমে গেছে। লোকসভায় তুমুল আক্রমণ অভিষেকের