মাস খানেক আগে এক বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় হলং বন বাংলো। রাজ্য পর্যটন দফতরের অধীনে থাকা আইকনিক এই বন বাংলো রাজ্য তো বটেই, রাজ্যের বাইরের পর্যটকদের কাছে ছিলো এক অমোঘ আকর্ষণের জায়গা। সেই বন বাংলোকেই ফের একবার স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনার পথে রাজ্য সরকার।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- ১৯৬৭ সালে মাদারিহাটে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিলো হলং বন বাংলো। তৈরির পর থেকেই পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই বাংলো। উত্তরবঙ্গে, বিশেষ করে ডুয়ার্সে ঘুরতে যাওয়া মানুষের কাছে হলং বন বাংলোয় অন্তত এক রাত কাটানো, যেন ছিল হাতে চাঁদ পাওয়ার মত। কিন্তু সম্প্রতি (১৯ জুন’২০২৪) এক ভয়ঙ্কর অগ্নিকান্ডে সম্পুর্ন ভষ্মীভূত হয়ে যায় এই বন বাংলো। ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত এই বন বাংলোর অগ্নিকাণ্ডের খবরে শুধু পর্যটকরাই নন, শোকাহত হন বন দফতর ও পর্যটন দফতরের আধিকারিকরাও। বন দফতরের পক্ষ থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই সঙ্গে এই বন বাংলোকে পুনরায় নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা শুরু হয় দফতরের অন্দরেই।
সূত্রের খবর, এই বন বাংলোকে আবার স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সবকিছুই আগের মতো করেই করা হবে। তবে যা কিছুই হোক না কেন, তা হবে বন দফতর ও পরিবেশ দফতরের আইন মেনেই। এই বিষয়ে বুধবার বন দফতরের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা জানান, “আমরা সব রিপোর্ট মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দিয়েছি। আমরাও চাই ওই বাংলো তার পুরনো অবস্থাতেই ফিরে আসুক। মুখ্যমন্ত্রীও এই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তিনি যেভাবে আমাদের নির্দেশ দেবেন আমরা সেভাবেই করব।” কবে নাগাদ ফের এই বন বাংলো আবার পর্যটকদের জন্য স্বমহিমায় ফিরে আসবে? এই প্রশ্নের জবাবে বনমন্ত্রী জানান, “আমরা প্রস্তুত আছি। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিলেই কাজ শুরু করা হবে। পুজোর আগেই ফের এই বাংলো খুলে দেওয়া যাবে কি না বলা যাচ্ছে না, তবে আমরা সব রকম চেষ্টায় আছি।” এদিকে ঐতিহ্যবাহী এই হলং বন বাংলোর দায়িত্ব পূর্বের মতো পর্যটন দপ্তরের হাতেই থাকবে নাকি বনদপ্তরের হাতে আসবে সে বিষয়ে কিছু গুঞ্জন শুরু হয়েছে। একদিকে পর্যটন দপ্তর হলং বন বাংলো তাদের হাত থেকে ছাড়তে চাইছে না, আবার উল্টোদিকে বনদপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, যেহেতু পুরো বিষয়টি বনদপ্তরকেই দেখাশোনা করতে হয় তাই এই ঐতিহ্যবাহী বন বাংলোর দায়িত্ব বনদপ্তরের হাতেই থাকা উচিত। সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে।
আরও পড়ুন : টেক অফের সময়েই ভেঙে পড়ল যাত্রীবাহী বিমান, ভয়াবহ দূর্ঘটনা নেপালে