সোমবার রাতে সোন্দা বালিঘাটে বালি তোলার জন্য ঢুকে পড়ে প্রায় কুড়ি-তিরিশটি লরি। তাদের মধ্যে কয়েকটি লরি বালি বোঝাই করে ঘাট ছেড়ে চলে গেলেও, প্রায় ১৫টি লরি আটকে পড়ে নদীর মধ্যে।
কৌশিক চক্রবর্তী, সাংবাদিক, পূর্ব বর্ধমান- টানা বৃষ্টি ও ব্যারেজ থেকে একসঙ্গে জল ছাড়ার ফলে হঠাৎ দামোদর নদে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেল একাধিক বালি বোঝাই লরি। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি থানার অন্তর্গত গোহগ্ৰাম পঞ্চায়েতের সোন্দা বালিঘাট এলাকায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে সোন্দা বালিঘাটে বালি তোলার জন্য ঢুকে পড়ে প্রায় কুড়ি-তিরিশটি লরি। তাদের মধ্যে কয়েকটি লরি বালি বোঝাই করে ঘাট ছেড়ে চলে গেলেও, প্রায় ১৫টি লরি আটকে পড়ে নদীর মধ্যে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একটি লরিতে হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে সেটি মাঝপথেই থেমে যায় এবং পিছনে থাকা আরও কয়েকটি লরি নদীর জলেই দাঁড়িয়ে পড়ে। এরই মাঝে দামোদরের জলস্তর দ্রুত হারে বাড়তে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে নদীর জলে তলিয়ে যায় একে একে প্রায় ১৫টি লরি। একজন লরি চালক ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “ঘাটে গাজনের চাঁদা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। সঙ্গে ছিল যান্ত্রিক গোলযোগ। কর্তৃপক্ষ একটুও সাহায্য করেনি। একটা জেসিবি এনে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুই সম্ভব হয়নি।”
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছয় গলসি থানার পুলিশ। লরি চালক ও খালাসিদের নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া লরিগুলি উদ্ধারে কোনও প্রশাসনিক উদ্যোগ চোখে পড়েনি। স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত রায় বলেন, “জলের তোড়ে এখন প্রায় ১৫টা লরি তলিয়ে আছে। ঘাটজুড়ে এখনও আতঙ্কের পরিবেশ। উদ্ধারকাজ শুরু না হলে বিপদ আরও বাড়বে।”
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে নদীর জলস্তর আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি বিবৃতি মেলেনি।
এই অবস্থায় স্থানীয়দের প্রশ্ন— ঠিক কবে শুরু হবে উদ্ধারকাজ? নদীর নিচে তলিয়ে যাওয়া লরিগুলোর ভবিষ্যত কী?
প্রশাসনের নীরবতা ও ঘাট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকা। পরিস্থিতির দ্রুত মোকাবিলায় প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।