এই ঘটনা ফের নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে জেকবাবাদ-কোয়েটা রুটের নিরাপত্তা নিয়ে। বহুদিন ধরেই এই রুটটি নাশকতা ও সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য কুখ্যাত। জাফর এক্সপ্রেস বিশেষ করে, এর আগে একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছে। বালোচিস্তান প্রদেশ দীর্ঘদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সহিংসতা এবং সেনার সঙ্গে টানাপড়েনের আবহে রক্তাক্ত। এই অস্থিরতার জেরে বারবার হামলার নিশানায় পড়ছে পরিবহণ ব্যবস্থা, বিশেষ করে রেলপথ।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- বুধবার ফের ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল পাকিস্তান। জেকবাবাদের কাছে রেললাইনে বিস্ফোরণের জেরে লাইনচ্যুত হল জাফর এক্সপ্রেসের ছ’টি কোচ। এই ঘটনায় বালোচিস্তান মধ্যে দিয়ে রেল যাত্রার নিরাপত্তা নিয়ে ফের চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জানা গিয়েছে, পেশোয়ার থেকে কোয়েটা যাওয়ার পথে হঠাৎই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে রেল ট্র্যাক। পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের ফলে তিন ফুট চওড়া একটি গর্ত তৈরি হয় রেললাইনে এবং ছ’ফুটেরও বেশি ট্র্যাক ধ্বংস হয়ে যায়। ধাক্কা এতটাই প্রবল ছিল যে, লাইনচ্যুত কোচগুলির চাকা পর্যন্ত ট্র্যাক থেকে ছিটকে পড়ে।
ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর খবর না মিললেও, একাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছয় উদ্ধারকারী দল এবং আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনা ফের নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে জেকবাবাদ-কোয়েটা রুটের নিরাপত্তা নিয়ে। বহুদিন ধরেই এই রুটটি নাশকতা ও সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য কুখ্যাত। জাফর এক্সপ্রেস বিশেষ করে, এর আগে একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছে। বালোচিস্তান প্রদেশ দীর্ঘদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সহিংসতা এবং সেনার সঙ্গে টানাপড়েনের আবহে রক্তাক্ত। এই অস্থিরতার জেরে বারবার হামলার নিশানায় পড়ছে পরিবহণ ব্যবস্থা, বিশেষ করে রেলপথ। রেললাইন, স্টেশন কিংবা ট্রেন— সবই বারবার সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে।
উল্লেখ্য, মাত্র তিন মাস আগেই, ২০২৫ সালের মার্চে একই জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাই করেছিল বালোচ লিবারেশন আর্মি (BLA)। সেই সময় ট্রেনে প্রায় ৩৫০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রেন মুক্ত করতে পাকিস্তান সেনা বড়সড় সামরিক অভিযান চালায়। তাতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। BLA দাবি করেছিল, তারা ১০০-রও বেশি পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। যদিও সেনার তরফে জানানো হয়, অভিযানে ৩৫ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। ঘনঘন হামলা ও নাশকতার ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ যাত্রীরা। কবে আবার ট্রেন চলবে, তার থেকেও বড় প্রশ্ন— আর কতটা নিরাপদ এই রুটে রেলযাত্রা? সরকারের কাছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, কীভাবে সাধারণ নাগরিকদের জন্য নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা যায় বালোচিস্তানের মতো অস্থির অঞ্চলে।