স্বসম্মানে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। অযোগ্যদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এই দাবিতে জোলায় জেলায় ডিআই অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ছিল চাকরিহারাদের। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে কসবার ডিআই অফিস শিক্ষভবন। পুলিশ চাকরিহারা শিক্ষক – শিক্ষিকাদের উপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্ন কেন চাকরিহারারা সেখানে গিয়েছিলেন?
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক : ৩ এপ্রিল সুপ্রিম রায়ে চাকরি হারিয়েছেন ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্ত প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। স্বসম্মানে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। অযোগ্যদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এই দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার এই দাবিতে রাজ্যের জেলায় জেলায় ডিআই অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান চাকরিহারারা। বাকি জেলার মত তাঁরা বিক্ষোভ দেখান কসবার ডিআই অফিসে। সেখানে গেট টপকে ভিতরে ঢুকেন চাকরিহারারা। গেটের তালা ভেঙে দেন তারা। তুমুল ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। অভিযোগ সেখানেই পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে চাকরিহারা শিক্ষকদের ওপরে। এমনকী শিক্ষিকাদের ওপরও লাঠিচার্জ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। লুটিয়ে পড়েন একাধিক শিক্ষক।
এমনকী তাঁদের লাথিও মারে পুলিশ বলে অভিযোগ । পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়ে সাংবাদিকেরা শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে, তিনি প্রশ্ন তুললেন কেন চাকরিহারারা গিয়েছিলেন সেখানে। তিনি জানান,”নেতাজি ইন্ডোরে মিটিংয়ের পর, মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেওয়ার পর, ডিআই অফিসে গেছিলেন কেন? ঘটনাটা দুর্ভাগ্যজনক এটা যেমন সত্যি, তেমন এটাও সত্যি তাঁদের নেত্রীস্থানীয়র সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আমরা বলেছি সর্বোতভাবে, মানবিকভাবে, আইনিভাবে কীভাবে বঞ্চিতদের চাকরি ফেরত দেওয়া যায় দেখা হবে। যে সরকারের কাছে দাবি করছেন, শিক্ষা দফতর, এসএসসি পাশে আছে, সেখানে আন্দোলন-বিক্ষোভ তো কিছুদিন স্থগিত রাখা যায়। এর জন্য তো দিন পড়ে যায়। আমার মনে হয় আরেকটু ধৈর্য্য রাখা উচিত। ওঁরা বৈঠকে বসতে চাইছেন, আবার ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের দিকে যাচ্ছেন, দুটো তো একসঙ্গে হতে পারে না। আমরা সাহায্য করব, বদ্ধপরিকর। পুলিশ কী করেছে তা নিয়ে তো মন্তব্য করতে পারি না। বারবার বলছি পোর্টাল আপডেট করব। কোথাও বেতন বন্ধের কথা আমার অন্তত জানা নেই।”
পুলিশের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধের পর ফের তাঁরা ডিআই অফিসের সামনে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। রাজ্য সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে ধিক্কার স্লোগান ওঠে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে। পুলিশের উপর প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। বিক্ষোভকারী চাকরিহারাদের বক্তব্য, স্বসম্মানে চাকরি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে। অন্যদিকে কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, প্রথমে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা চালায় এবং হিংসাত্মক আচরণ করে। চারজন পুরুষ পুলিশকর্মী এবং দু’জন মহিলা পুলিশকর্মী আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ হালকা বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয়।