মঙ্গলবার বিকেলে বছর দশেকের এক নাবালিকাকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় যেতে দেখা যায় স্থানীয় যুবক লালু লোহারকে। এরপর থেকেই নাবালিকার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার।
মিলন কর্মকার, সাংবাদিক, বাঁকুড়া: প্রতিবেশী নাবালিকাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হল না। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের গণপিটুনিতে মৃত্যু হল অভিযুক্ত যুবকের। ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থানার অন্তর্গত একটি গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে বছর দশেকের এক নাবালিকাকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় যেতে দেখা যায় স্থানীয় যুবক লালু লোহারকে। এরপর থেকেই নাবালিকার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। সন্ধ্যার মুখে গ্রামের বাসিন্দারা বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্তকে চেপে ধরেন। সন্দেহ হওয়ায় শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। তখনই মদ্যপ যুবকের অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।
স্থানীয়দের দাবি, যুবক স্বীকার করে যে, সে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করার পর শ্বাসরোধ করে খুন করেছে এবং প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে দেহটি মাটিতে পুঁতে ফেলতে গিয়েছিল। পরে অভিযুক্তের দেখানো জায়গা থেকে উদ্ধার হয় সদ্য খোঁড়া একটি গর্ত, তার পাশেই পড়ে ছিল কোদাল। কিছু দূরেই বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায় নাবালিকার নিথর দেহ। এরপরই উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত যুবকের উপর চড়াও হয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে পাত্রসায়ের থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে গুরুতর আহত অবস্থায় লালু লোহাকে উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই মৃত্যু হয় অভিযুক্তের।
এদিকে, ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা গ্রামে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ সূত্রে খবর, নাবালিকার পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বুধবার নাবালিকা ও অভিযুক্ত যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে।
এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে পাত্রসায়ের থানার পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত নয়, তবে মদ্যপ অবস্থায় অভিযুক্ত যুবক ওই নৃশংস কাণ্ড ঘটায়। স্থানীয়দের সহায়তায় আরও তথ্য সংগ্রহের কাজ চালাচ্ছে তদন্তকারী দল।