Date : 2024-04-24

কেন্দ্রের সমান ডি.এ দিতে হবে, স্যাটের সিদ্ধান্তে জয় পেলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা…

ওয়েব ডেস্ক: কেন্দ্রের হারেই ডি.এ দিতে হবে রাজ্যকে, ডি.এ মামলায় রাজ্য সরকারকে সাফ জানিয়ে দিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেট ট্রাইবুনাল। এদিন দুই বিচারপতি রঞ্জিত কুমার ও সুবেশ দাস তাঁদের রায় দেন। কিন্তু কিভাবে এই ডি.এ দেওয়া হবে সেই নিয়ে আইন করবে রাজ্য সরকার। একবছরের মধ্যেই আইন করে এই ডি.এ দিতে হবে কর্মীদের। অথবা ষষ্ঠ পে কমিশনের মধ্যেই এই বর্ধিত ডি.এ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বকেয়া টাকা মেটানোও রাজ্যের দায়িত্ব নগদে অথবা পি.এফ অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে হবে সেই টাকা এমনটাই জানানো হল স্যাটের তরফে।

এদিন বিচারপতিরা বলেন, সারা দেশে সরকারি কর্মচারীদের ডি.এ দেওয়া হয় কনজিউমার প্রাইজ ইনডেক্সের ভিত্তিতে। তাই মুদ্রাস্ফীতির উপর বিশেষ নজর দিয়ে ব্যবস্থা করা হয়। তাই সেই নিয়ম মানতেই হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও। ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ডি.এ নিয়মিত বাড়লেও ২০১১-এর পর থেকে অনিয়মিত ভাবে দেওয়া হয় ডি.এ। এদিন বিচারপতিরা নির্দেশ দেন রাজ্য সরকারকে তিনমাসের মধ্যে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করতে হবে এবং ৬ মাসের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারী করতে হবে এই সংক্রান্ত, এবং এক বছরের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে মহার্ঘ ভাতা।

এছাড়াও বিচারপতিরা বলেন, ভিন রাজ্যে নিযুক্ত সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রের হারে ডি.এ পাবেন এবং এই রাজ্যের কর্মীরা তার থেকে কম পাবেন এমন নিয়ম চলতে পারে না। তাই সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মীদের সমান হারেই ডি.এ দিতে হবে। রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডি.এ আইনসঙ্গত অধিকার বলে রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন সুখবর, এক ধাক্কায় ১০০ টাকা দাম কমল রান্নার গ্যাসের!

রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট স্যাটকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র হার নির্ধারণ করতে বলে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সমহারেই ডিএ পাবেন কিনা? স্টেট অ্যডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালকে তা স্থির করতে বলা হয়।

এরপর গত বছর ১৫ অক্টোবর ডিএ মামলার শুনানি শেষ হয়ে যায় স্যাটে। কিন্ত এর পর আবার রাজ্যের তরফে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে বিশেষ শুনানির আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। সেইজন্য হাইকোর্ট বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও শেখর ববি শরাফের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করে। কিন্ত ডিভিশন বেঞ্চ চলতি বছরের ৮ মার্চ ডিএ মামলায় রাজ্যের পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেয়। স্যাটকেই আবার বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। সেটারই শুনানি শেষ হয় ১৮ জুন।

শুনানির সময় ১২ জুন রাজ্য সরকার স্যাটে জানিয়েছিল রাজ্যের তহবিল নেই তাই ডি.এ দিতে পারছে না। রাজ্যের তরফে আইনজীবী অপূর্ব লাল বসু জানান, ” অর্থের অভাবে ডিএ দিতে পারছে না রাজ্য। কেন্দ্র সরকারও অসহযোগিতা করছে। কারণ সেন্ট্রাল ফিনান্সিয়াল রেসপন্সিবিলিটি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল অনুয়ায়ী রাজ্য ৩ শতাংশের বেশি ধার নিতে পারবে না।

আরও পড়ুন: তিস্তার বাঁধে লুকিয়ে ছিল “রিভার মনস্টার”

রাজ্যের পক্ষে কর্মীদের ডি.এ দেওয়ার উপায় থাকছে না।” কিন্তু রাজ্য সরকারের এই অজুহাত খারিজ করে দুই আইনজীবী কর্মচারীদের তরফে আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলি ও ফিরদৌস শামিম পাল্টা সওয়াল করেন, ডি.এর বিষয় যুক্ত মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে। রাজ্য সরকার এই যুক্তি দেখিয়ে আসলে এড়িয়ে যেতে চাইছে। আজ সেই লড়াইয়ের অবসান হল এবং জয় পেল রাজ্য সরকারি কর্মীরা।