Date : 2024-04-26

নেই চিকিৎসার খরচ, ক্ষতস্থানে জোঁক রক্তচুষে উপশম করে বেদনার ….

উত্তর দিনাজপুর: সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই পায়ে কামড়ে বসে যন্ত্রণা। ছটফট করতে করতে পাশের পানা পুকুরে ছুটে যান তিনি। নেমে পড়েন কাদাজলে। কিছুক্ষণ পর পায়ে ছেঁকে ধরা জোঁক নিয়ে উঠে আসেন পারে। রক্ত পড়তে থাকে।

কিছুক্ষণ পর রেহাই পান যন্ত্রণা থেকে। জোঁক পা থেকে ছাড়িয়ে বেরিয়ে পড়েন ঝালমুড়ির গাড়ি নিয়ে। হ্যাঁ, শুনলে বা দেখলে শিউড়ে উঠবে আপনার শরীর।

তীব্র আর্থিক কষ্টে এভাবেই দিন কাটছে। তার উপর জাঁকিয়ে বসেছে কঠিন অসুখ।

অভাবের তাড়নায় চিকিৎসা করার ক্ষমতা নেই। অগত্যা অসহ্য বেদনা থেকে বাঁচার জন্যের জোঁক থেরাপিকে বেছে নিয়েছেন এই ব্যক্তি। পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা সায়ন সরকারের পায়ে বেশ কিছুদিন ধরে বাসা বেঁধেছে চর্মরোগ। আর সেই থেকেই সারা পায়ে ছেয়ে গেছে অ্যালার্জি। অসহ্য যন্ত্রণায় ঘুম আসে না রাতের পর রাত।

আরও পড়ুন :হুগলীর গ্রাসে ‍১১৭ নং জাতীয় সড়ক, আতঙ্কে ডায়মন্ড হারবারবাসী

অথচ সকাল হলেই পেট চালানোর তাগিদে বেরিয়ে পড়েন ঝালমুড়ির গাড়ি নিয়ে। সারাদিন পর সামান্য রোজগারে স্ত্রী ও দুই পুত্রের মুখে তুলে দেন খাবার। ছেলেদের পড়াশুনোর খরচ চালানো দায় হয়ে উঠেছে। হেঁসেলে চড়ে না হাড়ি, এরমধ্যেই অসুখের থাবা চেপে বসেছে সায়নবাবুর উপর। ওষুধ কেনার খরচ কে দেবে? কোথায় বা গিয়ে মিলবে চিকিৎসা।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তারবাবুদের বড়িতে কাজ হলেও সঠিক চিকিৎসার অভাবে হয় না রোগের উপশম। অগত্যা কিছু মানুষের পরামর্শে জোঁক থেরাপির সাহায্য নিয়েছেন তিনি। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বদলে এভাবেই নিজের রোগের চিকিৎসা করতে জোঁকের সাহায্য নিয়ে চলেছেন তিনি। বিষবেদনা কমাতে এভাবেই রক্ত মোক্ষণ পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।

আরও পড়ুন : তিনকুলে নেই কেউ, গানই তাঁর সঙ্গী, শুনেছেন রাণুর “এক প্যয়ার কা নগমা”?

স্বামীর কষ্টের দু চোখে আর দেখতে পারেন না স্ত্রী বুলবুলি সরকার। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই থেরাপির প্রচলন নেই তবে ভারত সহ বিশ্বের বহু দেশে জোঁক থেরাপির প্রচলন আছে। এই সম্পর্কে চিকিৎসকদের মত, স্বকীয়ভাবে চিকিৎসা করা কোন রোগের পক্ষেই ভালো নয়। তবে এইভাবে রক্ত শোষণ পদ্ধতি চালিয়ে যেতে থাকলে পায়ের নিচে ক্ষত স্থান থেকে গ্যাংরিং শুরু হতে পারবে বলে মত চিকিৎসকদের।