কলকাতা: বিধায়ক প্রতিমা রজকের প্রশ্নে হঠাৎ-ই হাতাহাতি শুরু হয়ে গেল বিধানসভায়। আর সেই হাতাহাতি থামাতে বিধানসভার ওয়েলে নেমে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী! কাটমানি নিয়ে উত্তরবঙ্গ পরিবহন সংস্থায় কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। এই নিয়ে ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করে বিধানসভার অধিবেশন। টাকার বিনিময়ে এনবিএসটিসি-তে স্থায়ী সরকারি চাকরি মিলছে কিনা? প্রশ্ন তোলেন প্রতিমা রজক। সরাসরি কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে মিঠুন বলে এক ব্যক্তির নাম করেন প্রতিমা দেবী।
এরপরেই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতীমা দেবীকে সতর্ক করেন। সরকারকে অবমাননা করার অধিকার নেই বলে প্রতিমা রজককে সতর্ক করেন স্পিকার। এরপরেই হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারী উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “ওনাকে প্রমাণ করতে হবে। নয়তো বিধানসভার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।” এখানেই শেষ নয়। এরপরই বিধানসভায় কংগ্রেসের বেঞ্চের দিকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “পরের বার আর জিততে পারবেন না। সাফ হয়ে যাবেন। মুর্শিদাবাদ ফাঁকা করে দেব।”
বিধানসভায় পরিবহন মন্ত্রীর এই উত্তেজিত বাক্য বিনিময়ের পরেই ঝামেলা চরমে পৌঁছায়। ওয়েলে নেমে পড়ে পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দিকে তেড়ে যান ভরতপুরের কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ্বর চট্টোপাধ্যায়। সেইসময় তাঁর সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যান সুতির কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এরপরই তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্যের সঙ্গে হাতাহাতি বেঁধে যায় কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশের। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তখন বিধানসভার অন্দরে।
হাতাহাতির পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেমে পড়েন ওয়েলে। বিধানসভার ইতিহাসে এই প্রথমবার কোন ঝামেলা চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেই ঝামেলা থামাতে নেমেছেন। পরিস্থিতি শান্ত হতেই বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিরোধীদের সতর্ক করেন চড়া সুরে।
অধ্যক্ষ বলেন,”বিধানসভার অন্দরে এই অবস্থা কোনওভাবেই কাম্য নয়। আমি আব্দুল মান্নান ও সুজনবাবুকে বলব, কোনও বিধায়ক এরকম আরেক জনের দিকে মারতে উঠে আসছে এটা উচিত নয়, আপনারা দেখুন।” এদিকে পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিধায়ক প্রতিমা রজককে ক্ষমা চাইতে বলেন।