ওয়েব ডেস্ক:- পৃথিবীতে এমন অনেক বস্তুই আছে যা ঘিরে আশ্চর্য সব ঘটনা জড়িত আছে। পশ্চিম আমেরিকার ওয়াইওমিং রাজ্যের ব্ল্যাক হিল নিয়ে প্রচলিত আছে একাধিক কাহিনী। স্থানীয় জনশ্রুতি বলছে এই অঞ্চলে এই ব্ল্যাক হিলটিতে আসলে বাস করে শয়তান। প্রচলিত বেশ কয়েকটি কাহিনীর জন্য পাহাড়ের মতো উচ্চভূমিটির নাম হয়েছে ডেভিলস টাওয়ার। কিন্তু সেই কাহিনী কি নিছক গুজব বা অন্ধবিশ্বাস নাকি সত্যিই ডেভিলস টাওয়ারের উপর শয়তান বাস করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিবছর এই স্থানে অসংখ্য পর্যটক আসেন। আদিবাসী অধ্যুষিত এই অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে গেছে বেল ফিস নদী। এই নদী পর্যন্ত পৌঁছালেই দূর থেকে দেখা যায় ডেভিলস টাওয়ার। দূর থেকে দেখতে পাহাড়ের মতো হলেও সামনে গেলে ভুল ভেঙে যাবে আপনার। প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিত হয়েছে ডেভিলস টাওয়ার এমনটা বলা হলেও বাস্তবে এর আকার ও গঠনশৈলী দেখলে মনে হবে না যেন কৃত্তিম ভাবেই নির্মান করা হয়েছে এই উঁচ্চভূমিটি।
ডেভিলস টাওয়ার আমেরিকার সর্বপ্রথম স্বীকৃত জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ। ২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯০৬ সালে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট এটিকে জাতীয় স্মৃতি স্তম্ভ হিসাবে ঘোষণা করেন।
২০০৫ সালে নেটিভ আমেরিকানরা এই চূড়ার বিকৃত নাম পরিবর্তনের দাবি জানায়। তবে এই পাহাড়ের সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িত থাকায় তাদের দাবি মানা হয়নি।
এই টাওয়ারটি আগ্নেয়গিরি পাথর দ্বারা তৈরি হলেও এটি আসলে আগ্নেয়গিরি না। এমনকি খুব কাছেও কোনো আগ্নেয়গিরি মিলবে না। তবে অতীতে কোন আগ্নেয়গিরি ওই অঞ্চলে ছিল কিনা তার প্রমানও মেনেনি।
অনেক ভূতাত্ত্বিকের মত, এটি আসলে ভেতর দিকে ফাঁপা। এর ভেতরে কোনো গোপন মিলিটারি বেজ বা এলিয়েন চেম্বার আছে। যদিও এমন কোন প্রমান এখনও পাওয়া যায়নি।
এর চূড়ার উপরের অংশ আয়তনে প্রায় একটা ফুটবল মাঠের সমান। সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে এখানে ফুটবল খেলা যায় না।
জুন মাসে এর চূড়ায় ওঠার অনুমতি নেই, কারণ সে সময় এখানে অনেক আমেরিকান আদিবাসীরা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। এছাড়া শীতে পাখিদের আনাগোনার জন্য বন্ধ করে রাখা হয় ডেভিলস টাওয়ারের রাস্তা।
আদিবাসী আমেরিকানদের মধ্যে কথিত আছে, ভাল্লুকের হাত থেকে বাঁচতে ওই পাহাড়ের উপর চড়ে পড়তেন তারা। হিংস্র জন্তুদের হাত থেকে বাঁচার জন্য নাকি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতেন তারা। ঈশ্বর প্রার্থনা শুনে এই পাহাড়টি নির্মান করে দিয়েছেন। ভাল্লুকের তাড়া খেয়ে এই পাহাড়ের উপর আশ্রয় নিত আদিবাসীরা। ভাল্লুক এখানে উঠতে পারত না। পাহাড়ের গায়ে লম্বা লম্বা খাঁজ দেখতে পাওয়া যায় স্থানীয়দের কথায় এগুলো ভাল্লুকের নখের আঁচর।
এই সব তত্ত্বের থেকে অনেক ধাপ এগিয়ে গেছে বর্তমান তত্ত্ব। অনেক ভূ-বিজ্ঞানীদের মত এই পাহাড়ের মতো দেখতে টাওয়ারটি আসলে কোন স্পেসশিপ ল্যাণ্ডিং-এর জায়গা। টাওয়ারটি তৈরি করেছে ভিনগ্রহের জীব। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোন গুরুত্ব নেই। ডেভিলস টাওয়ার নিয়ে হলিউডে একাধিক কল্পবিজ্ঞানের সিনেমাও তৈরি হয়েছে। তবে বৈজ্ঞানিক ভাবে এখনও এই টাওয়ার বা পর্বতের সঙ্গে কোন এলিয়ানের যোগাযোগ পাওয়া যায়নি।