হুগলি:- কে বলে ঈশ্বর নেই? এই ঘটনা শুনলে আর সেটা বিশ্বাস করতে পারবেন না আপনি। কথায় আছে পৃথিবীতে ঈশ্বরের জীবন্ত প্রতিনিধি যদি কেউ হয়ে থাকেন তবে তিনি হলেন মা-বাবা। ছেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসা করার মতো অর্থ নেই। চোখের সামনে ছেলেকে তিলে তিলে শেষ হয়ে যেতে দেখে শান্ত থাকতে পারছেন না মা। ৯৬ বছর বয়সে পথে নেমেছেন মা। চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার বাসিন্দা সুভাষিনী চট্টোপাধ্যায়। অন্ধকার স্যাঁতস্যাতে এক কামরার ঘরে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে হাল ছাড়তে দেননি অনিল বাবুর “জীবন্ত ঈশ্বর”। ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ থেকে হুগলিতে এসেছিলেন সুভাষিনী চট্টোপাধ্যায়। চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার এই ঘরে বসবাস শুরু করেন তিনি। ২০ বছর আগে স্বামী মহেন্দ্রনাথকে হারান তিনি।
একে একে আলাদা হয়ে যায় ৩ ছেলে। মেজ ছেলেকে নিয়ে একাই থাকতেন সুভাষিনী দেবী। একবছর হল মেজছেলের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়েছে। সুভাষিনী দেবীর একমাত্র মেয়ে দিল্লিতে পরিচারিকার কাজ করেন। তার উদ্যোগে দিল্লি এইমস-এ ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসার খরচের কথা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে সুভাষিনী দেবীর।
তবুও ছেলেকে সুস্থ করতে বদ্ধপরিকর মা। নিজে অনাহারে থেকে বার্ধক্যভাতার সামান্য টাকা দিল্লিতে পাঠাতে থাকেন। কিন্তু সেই টাকায় চলছে না চিকিৎসার খরচ। বাকি টাকা জোগার করতে তাই জীর্ণ শরীরে পথে নেমেছেন বৃদ্ধ সুভাষিনী দেবী। প্রতিবেশী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, চেনা পরিচিত কারোর কাছেই হাত পাততে বাকি রাখছেন না বৃদ্ধা।
৯৬ বছর বয়সে হাঁড়কাঁপানো ঠান্ডায় সামান্য চাদর জড়িয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে অর্থের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন সুভাষিনী দেবী। এমন অসহায় অবস্থায় আরোগ্য নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বেশ কিছু অর্থ দিয়ে বৃদ্ধাকে সাহায্য করেছেন। যদিও প্রয়োজনের তুলনায় তা অত্যন্ত কম। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য ইন্দ্রজিৎ দত্তর আর্জি আরও কিছু মানুষ যদি সুভাষিনী দেবীর পাশে এসে দাঁড়ান এবং তার এই লড়াইয়ে শরিক হন তবে বাঁচানো যেতে পারে তাঁর ছেলেকে। ক্যান্সার মারণ ব্যাধি। তাই অর্থ জোগাড় হলেও জীবন মৃত্যুর মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে সুভাষিণী দেবীর ছেলের জীবন। ভয় কি! অনীল বাবুর সঙ্গ আছেন সাক্ষাৎ জীবন্ত ঈশ্বর।