Date : 2024-04-16

জয়েশ মডিউল ভাঙল পুলিশ, বাজেয়াপ্ত প্রচুর বিস্ফোরক

ওয়েব ডেস্ক: দুটি পৃথক অপারেশনে জম্মু-কাশ্মীরে পাঁচজন সন্ত্রাসবাদীকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। সকলেই আল-কায়েদার ছত্রচ্ছায়ায় থাকা জয়েশ-ই-মহম্মদের মডিউলে ছিল। পুলিশি অপারেশনে সেই মডিউল ভেঙে গিয়েছে। সন্ত্রাসবাদীদের গোপন ডেরা থেকে প্রচুর পরিমাণে জিলেটিন স্টিক, বিস্ফোরক, ডিটোনেটর, অস্ত্রশস্ত্র, ব্যাটারি এবং নাইট্রিক অ্যাসিড পাওয়া গিয়েছে। ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে তারা ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটাবে বলেই অত বিস্ফোরক মজুত করেছিল। এ কথা জানিয়েছেন মধ্য কাশ্মীর রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (ডিআইজি) বিধি কুমার বিরধি।

আরও পড়ুন : অ্যাপ ক্যাবে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সোনামের, আতঙ্কিত অভিনেত্রী ট্যুইট করলেন

তিনি জানিয়েছেন, এর আগেও শ্রীনগরে সন্ত্রাসবাদী হামলায় এই মডিউল যুক্ত ছিল। ৮ জানুয়ারি শ্রীনগরের সউরা এলাকার হাবাক ক্রসিংয়ে একটা গ্রেনেড হামলা হয়। বেশ কয়েক জন সাধারণ নাগরিক তাতে জখম হন। ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। সেই তদন্তেই এই মডিউলের খোঁজ মেলে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সন্ত্রাসবাদীদের একটি ডেরা থেকে দুজনকে পাকড়াও করে পুলিশ। গাড়িচালক এজাজ আহমেদ শেখ এবং ফেরিওয়ালা উমর হামিদ শেখ। দুজনেই হজরতবাল মসজিদ সংলগ্ন মহল্লায় থাকত।

জেরায় এজাজ আহমেদ শেখ এবং উমর হামিদ শেখ স্বীকার করেছে, ৮ জানুয়ারির গ্রেনেড হামলায় তারা জড়িত ছিল। হজরতবাল মসজিদের কাছেই কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৯-এর ২৬ নভেম্বর সেখানে যে হামলা হয়েছিল সে ব্যাপারেও ধৃতরা উল্লেখযোগ্য সূত্র দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিআইজি বিরধি।

আরও পড়ুন : ভ্যানিলা-চকলেটে ঢেকেছে রাস্তা, স্বাদে মুগ্ধ ত্রিশূরবাসী

তাদের দেওয়া সূত্রের ভিত্তিতেই পুলিশ হজরতবাল এলাকায় আবার অপারেশন চালায়। সেই অভিযানে ধরা পড়ে ইমতিয়াজ আহমেদ চিকলা ওরফে ইমরান, সাহিল ফারুক গজরি এবং নাসির মির। চিকলা একটি ক্রীড়াসামগ্রীর দোকান ফেঁদে বসেছিল। গজরি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করত। নাসির মির ব্যাবসা করত। ধৃত প্রথম দুজনের মতো এই তিন জনও হজরতবাল মসজিদ লাগোয়া মহল্লাতেই থাকত বলে ডিআইজি জানিয়েছেন।

১৯৯৩ সালের অক্টোবরে জঙ্গিরা পবিত্র হজরতবাল মসজিদে ঢুকে বসেছিল। তাদের হটাতে নিরাপত্তা বাহিনী নামে। সেই অপারেশন নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে হইচই হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ তোলে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট হাতে নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ভারত সরকার অপরাধী বলে অভিযোগ তোলেন। যদিও তাঁর সেই অভিযোগ পাত্তা পায়নি। বাস্তবে, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মসজিদে ঢুকে বসে-থাকা জঙ্গিরা চাইছিল অপারেশন ব্লু স্টারের মতো হজরতবালেও ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী সামরিক অভিযান চালাক। ঐতিহ্যবাহী মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। তাতে তারা মুসলিম দুনিয়ার সহানুভূতি পাবে। এই হজরতবাল এলাকাতেই থাকত জয়েশ মডিউলের পাঁচ সন্ত্রাসবাদী।

জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, শ্রীনগরের জনজীবন বিপর্যস্ত করতেই তারা অত বিস্ফোরক মজুত করেছিল। তবে আসল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে ধারাবাহিক আইইডি বিস্ফোরণ। নাইট্রিক অ্যাসিড সন্ত্রাসবাদীরা সাধারণত ব্যবহার করে বড় কোনও ইমারত কিংবা ব্রিজ ধসিয়ে দেওয়ার জন্য।