ওয়েব ডেস্ক : নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে সোমবার দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধী এবং ভারতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংয়ের উপস্থিতিতে বিরোধীরা বৈঠক করলেন। যদিও এই বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক শেষে সোনিয়া গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরস্পর-বিরোধী কথা বলছেন। আজ যা বলছেন, পরের দিন বলছেন তার উলটো কথা। সোনিয়া আরও বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে সাধারণ নাগরিকদের উপর উৎপীড়নের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সামগ্রিক প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।
দিল্লির এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক বিরোধী নেতানেত্রীই উপস্থিত ছিলেন না। বাল থ্যাকারের প্রতিষ্ঠিত শিব সেনা এখন বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধী শিবিরে অবস্থান করছে। কিন্তু তারাও এই বৈঠকে যোগ দিতে পারেনি। সেনা-র মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, বৈঠকের খবর পাওয়ার ব্যাপারে একটা যোগাযোগের অভাব ঘটেছিল। তাই শিব সেনা-র এই বৈঠকে আর যোগ দেওয়া হয়ে ওঠেনি। যদিও যোগাযোগের অভাবের এই অজুহাতকে অনেকে সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠক থেকে শিব সেনা-র দূরে থাকার কৌশল বলেই মনে করছে। বাস্তবে শিব সেনা-ও নাগরিকত্ব আইনেরই পক্ষে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদি বলেছেন, নাগরিকত্ব আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই করা হয়েছে। নাগরিকত্ব বিলোপের জন্য নয়। সোমবারের বিরোধী বৈঠকে এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করা হয়। সেখানে এ কথাও বলা হয় যে, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে বেলুড় মঠকেও প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করেছেন।
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ জাতীয় স্তরের একাধিক নেতানেত্রী এই বৈঠকে উপস্থিত না-থাকায়, বাস্তবে এই বৈঠকে কী লাভ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর মধ্যেই এমন একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সিএএ-র বিরোধিতার নামে দেশজুড়ে অশান্তিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে কংগ্রেস-বাম নেতৃত্ব। সিএএ-র প্রতিবাদে সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস-বাম নেতারা একত্রে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। ছাত্র আন্দোলনের প্রতিও তাঁরা সহানুভূতি জানিয়েছেন। কিন্তু দেশজুড়ে যে নৈরাজ্য ও অশান্তি চলছে তা স্তিমিত করার জন্য তাঁদের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগই দেখা যাচ্ছে না। সোমবারের বৈঠকেও সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেসের অন্যান্য নেতা মিলে ছাত্র রাজনীতির পক্ষে সহানুভূতি জানান। বলেন, সংবিধানে দেওয়া মৌলিক অধিকার বলে যে কোনও নাগরিকের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার আছে। সেই অধিকার খর্ব করাই সংবিধানের অপমান।