ওয়েব ডেস্ক: কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তোরো পার্বণ। নাহ্, নিজের পার্বণে, আনন্দ, উৎসবেই থেমে থাকে না বাঙালি। ঈদ হোক বা ক্রিসমাস সব উৎসব নিয়েই হুজুগে মাতে বাঙালি। আর এই উৎসবের দিনে কল্লোলিনী কলকাতার রাতের ঘর আলো করে রাখে যারা, অন্যের আনন্দে যারা নিজের শরীর বিলিয়ে দিতেও কখনো পিছিয়ে যায় না, তারা সবাই কিন্তু এই সব উৎসবের থেকে আসলে অনেক দুরে থাকেন। তবে তাদের জীবনে কি কোন উৎসব নেই? তারা কি কখনো ছুটি পায়না রোজ নামচার জীবন থেকে? মধ্যকলকাতার বুকে নিয়ন গ্যাসের হ্যালোজেন আলোর নিচে দাঁড়িয়ে থাকেন যারা তাদের ঘরেও উৎসব আসে। হ্যাঁ, বছরে কার্তিক পুজোর দিনটাতেই আলোর রোশনাইতে ভরে ওঠে তাদের ঘর। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন, বাঙালির ৩৩ কোটি দেব-দেবীর বারো মাসে তোরো পার্বনের মধ্যে শুধুমাত্র কার্তিক পুজোকেই কেন বেছে নিলেন তারা? উৎসবের দিনগুলোয় তারা অনেক বেশী প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেন কাস্টমারদের মধ্যে। কিন্তু বছরের শুধুমাত্র কার্তিক পুজোর দিনটাই তাদের নিয়নবাতির সামনে আসতে হয় না। শরীরের বিনিময় রোজগারের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা যৌনকর্মীরা এই সময় নিজেদের মাতিয়ে তোলেন উৎসবের আমেজে। কার্তিকের মতো বাবু হবে তাদের, কখনও আবার কার্তিকের মতো বীর সন্তান আসা করেন কেউ কেউ। কার্তিক পুজো মানেই তাই এখন সোনাগাছির উৎসব। কার্তিকের মতো যেন সন্তান হয়, বা বাবু আসে। এই প্রার্থনাতেই সোনাগাছির যৌনকর্মীরা ধুমধাম করে কার্তিকের পুজো করেন৷ যে কারণে,পুজোর পর নির্ধারিত দিনে কার্তিকের প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় কোনও কোনও যৌনকর্মী আর কান্না চেপে রাখতে পারেন না৷ কারণ, সন্তানের বিসর্জন তাঁরা সহ্য করবেন কীভাবে?’ দুর্গাপুজো, কালিপুজোর পর কার্তিকের মধ্যে দিয়ে যেন তারা ফিরে পান তার কাঙ্খিত সন্তান, বা কাল্পনিক প্রেমিককে এভাবেই যেন তৈরী হয় তাদের কাল্পনিক সংসার। কার্তিকেই যেন মজে আছে তাদের স্বপ্ন।
Facebook
Instagram
Twitter
Rplus is most proud of how its work impacts the real world and how it is using its powerful reach to campaign for and with the people of Bengal.