ওয়েব ডেস্ক : রবিবার কাবুলে অনিল রাজ নামে ভারতীয় আমেরিকান নাগরিক নিহত হন। আফগানিস্তানে রাষ্ট্রসংঘের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। কার এক্সপ্লোশনে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আরও পাঁচজন জখম। এর দুই দিন পর ২৬/১১ স্মরণে পাকিস্তানের নাম না করে ক্রোধ প্রকাশ করেন আমেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পিও। সিআইএ’র এক সময়ের অধিকর্তা মাইক পম্পিও অনেক বছর আগেই পাকিস্তানের প্রশাসন তথা সেদেশের সামরিক বাহিনীর আগাপাশতলা ঘেঁটে ফেলেছেন। ফলে তাঁর অজানা কিছুই নেই। আমেরিকার বিদেশ সচিব বলেছেন, “২৬/১১য় যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের পরিবারের পক্ষে এই দিনটি কখনই ভোলা সম্ভব নয়। অথচ এই সন্ত্রাসবাদী হামলার যারা হোতা তারা এখনও শাস্তিই পেল না। একইসঙ্গে অনিল রাজের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টানেন পম্পিও। বলেন, রাষ্ট্রসংঘের এই অফিসিয়াল আফগানিস্তানের মানুষকে সাহায্য করার জন্য কাজ করছিলেন। তাঁকেই টার্গেট করা হল। আমেরিকা তীব্রভাবে এই ঘটনার নিন্দা করে।” যদিও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি অনিল রাজের হত্যাকারী কারা। অনিল রাজের জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ায়। মানবাধিকার নিয়ে আমেরিকারই বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন।
আরও পড়ুন : বিদেশের মাটিতে সোনা জিতে ভারতীয় সেনার নাম উজ্বল করলেন অনুজ
২০১৫ সালের শেষ থেকে ’১৮র মার্চ, রাষ্ট্রসংঘের কাজে একটানা কাবুলেই ছিলেন। সম্প্রতি আফগানিস্তানে তালিবানিরা একের পর এক হামলা করছে। হাক্কানি নেটওয়ার্কের বাঘা বাঘা সন্ত্রাসবাদীকে রিমোট কনট্রোলের সাহায্যে ইউএভি বিস্ফোরণে খতম করার পরেও আফগানিস্তানে তালিবানি ফিদায়েঁরা হামলা চালাচ্ছে। কার এক্সপ্লোশন ঘটাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় আমেরিকান অনিল রাজ হত্যার পিছনেও তারা রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : দাম বড় বালাই! সোনা ছেড়ে পেঁয়াজ নিয়ে চম্পট দিল চোর
আরও পড়ুন : ইসরোকে আকাশের ‘চাঁদ’ পেড়ে দিল মুম্বই
২৬/১১’র অপরাধীদের মদতদাতা পাকিস্তানের সামরিক গুপ্তচর বাহিনী ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই। আমেরিকার বিদেশ সচিব কিন্তু পাকিস্তানের নাম সরাসরি করেননি। তিনি ইরানের প্রসঙ্গ টেনেছেন। বলেছেন, “ট্রাম্প এবং আমি বিশ্বসন্ত্রাসের বৃহত্তম মদতদার রাষ্ট্র ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরানের উপর নজর রাখছি।…ওই দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেসব প্রতিবাদের ঘটনা ঘটছে মনোযোগের সঙ্গে সেগুলি লক্ষ করছি।” ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ের উপর ভয়াবহ আক্রমণ হেনেছিল আইএসআইয়ের পরিচালনাধীন কট্টরপন্থী মুসলিম সন্ত্রাসবাদীদের আত্মঘাতী টিম। আরব শেখশাহির পয়সায় নির্মিত জঙ্গি শিবিরে তালিম নিয়ে, আইএসআইয়ের এক মেজরের নেতৃত্বে করাচি বন্দর থেকে চিন নির্মিত মোটরবোটে রওনা দিয়েছিল এই ফিদায়েঁরা। আরব সাগরে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের নৌকা অপহরণ করে তারা। প্রথমে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে মুম্বইয়ের উপকূলের দিকে নৌকা চালাতে বাধ্য করে। তার পর গুলি করে তাঁদের জলে ফেলে দেয়। বেতারে ভারতীয় উপকূলরক্ষীদের ধোঁকা দিয়ে মুম্বইয়ের সমুদ্রতীরে এসে নৌকা বাঁধে। পরের ঘটনাগুলি ভারতবাসী কোনও দিনই ভুলবে না। সিআইএ’র প্রাক্তন কর্তা মাইক পম্পিও’ও ভোলেননি। কিন্তু তিনি সরাসরি কেন পাকিস্তান রাষ্ট্রকে ওই ঘটনার চক্রী বলে ঘোষণা করলেন না, কেন শুধু ইরানকে সন্ত্রাসের মদতদাতা বললেন তা নিয়ে খোদ আমেরিকাতেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে।