গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মাঠে নামা মানেই ঝড় ওঠা। তবে একদিনের ক্রিকেটে আর সেই ঝড় উঠবে না কারণ একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন এই অজি তারকা। পায়ের চোট নিয়ে ভুগছিলেন অনেক দিনই। তাঁর অবসরের কথা শুনে মনখারাপ অনুরাগীদের।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ম্যাড ম্যাক্সের এই অবসর যে আচমকা তা কিন্তু নয়, বেশ অনেক দিন ধরেই সেই বিধ্বংসী ফর্মে ছিলেন না ম্যাক্স। তবে ওয়ান ডে থেকে অবসর নিলেও এখনই কিন্তু ২২ গজকে বিদায় জানাচ্ছেন না তিনি কারণ আগামী বছর টি-২০ বিশ্বকাপে দেখা যাবে তাঁকে।
ম্যাক্সওয়েল নিজেই জানিয়েছেন, ৫০ ওভারের ফরম্যাটের শারীরিক চাপ এবং পায়ের এক পুরনো গুরুতর চোট তার ফিল্ডিং ও সামগ্রিক পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলছিল। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময়ই, যেখানে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হারে, তিনি বুঝতে পারেন, সময় হয়েছে সরে দাঁড়ানোর। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলিকে তিনি জানিয়েছিলেন, ২০২৭ সালের এক দিনের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলতে পারবেন না তিনি। তাঁর অবসরের কথা শুনে স্বাভাবিক ভাবেই মন খারাপ তাঁর অনুরাগীদের।
নিজের সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে ম্যাক্সওয়েল ফাইনাল ওয়ার্ড পডকাস্টে বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল যে আমার শরীর সঙ্গ দিচ্ছে না। দলকে কিছুটা হলেও হতাশ করছিলাম। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক প্রধান জর্জ বেইলির সঙ্গে আমার এই নিয়ে কথা হয়েছিল এবং আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, তাঁর ভবিষ্যতের চিন্তাভাবনা কী। আমরা সেই সময়ে ২০২৭ বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলেছিলাম এবং আমি তাঁকে বলেছিলাম, ‘আমি মনে করি না আমি সাতাশের বিশ্বকাপ খেলতে পারব। এখন সময় এসেছে পরিকল্পনা করার যাতে আমার জায়গায় দল অন্য কাউকে ভাবতে পারে।’ ম্যাক্সওয়েলের প্রায় কেরিয়ার শেষ করে দেওয়া পায়ের চোট যে তাঁর শরীরে প্রভাব ফেলেছিল, তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট ছিল। অসাধারণ ফিল্ডার তিনি, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেই ধার ছিল না তাঁর।
ম্যাক্স তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন ২০২৩ সালের এক দিনের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। যে ম্যাচে বারবার মনে হচ্ছিল্ আফগানিস্তানের কাছে হেরে অষ্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেবে। সেই পরিস্থিতি থেকে পায়ে ক্র্যাম্প নিয়েও অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। যে ইনিংসকে মহাকাব্যিক আখ্যা দেওয়া হয়। সেদিন একার কাঁধে দলকে জিতিয়েছিলেন। পরে ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালের জয়সূচক রানও এসেছিল ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটেই। সেদিন ভারত বধের দায়িত্বও নিয়েছিলেন ম্যাক্সই।
২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার এক দিনের দলে অভিষেক হয়েছিল ম্যাক্সওয়েলের। দেশের হয়ে ১৪৯টি ওয়ানডে খেলেছেন। করেছেন ৩৯৯০ রান। ৪টি সেঞ্চুরি ও ২৩টি হাফ সেঞ্চুরি আছে ম্যাক্সওয়েলের নামে। ৭৭টি উইকেট নেন। ২০১৫ এবং ২০২৩ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন ম্যাক্সওয়েল। বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান বললেও কম বলা হবে তাঁকে। তার গড় ৩৩.৮১। স্ট্রাইক রেট ১২৬.৭০। যা ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, প্রথম আন্দ্রে রাসেলের পরেই তাঁর নাম