পুলিশকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে এক দিনের মাথায় ঢোঁক গিললেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবীর। কিন্তু তারপরেই বাঁধিয়ে বসলেন আরেক গোলযোগ। নিজেকে মুর্শিদাবাদের অলরাউন্ডার ঘোষণা করে জানিয়ে দিলেন ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে অনেক বর্তমান বিধায়কই নাকি টিকিট পাবেন না।
শংকর গোস্বামী, মুর্শিদাবাদ– হুমায়ূন কবীর আর বিতর্ক যেন একে অপরের পরিপূরক। হুমায়ূন কবীর মুখ খোলা মানেই নতুন বিতর্কের জন্ম। গতকাল বহরমপুরে একটি অনুষ্ঠানে ভরতপুরের এই তৃণমূল বিধায়ক অনেকটা অনুব্রত মণ্ডলের সুরেই পুলিশ প্রশাসনকে আক্রমণ করেছিলেন। বলেছিলেন আমি যদি বিরোধী দলে থাকতাম তাহলে মুর্শিদাবাদের লালগোলা, বড়ঞাঁ বা ভরতপুর থানাকে দেখিয়ে দিতাম, ইত্যাদি, ইত্যাদি। হুমায়ূন কবীরের এই মন্তব্যের পরই ফের একবার বিরোধীরা বলতে শুরু করেন যে রাজ্য পুলিশকে রাজ্যের শাসকদলের নেতারা ঠিক কোন চোখে দেখে। যদিও রবিবারের করা মন্তব্য থেকে সরে এসে সোমবার হুমায়ূন কবীর জানান, আজ পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, তাই আমি আর কিছু বলবো না।
এরপরেই ফের বোমা ফাটান এই বিতর্কিত নেতা। এবার একেবারে সাংবাদিকদের সামনেই তিনি জানিয়ে দেন, ২০২৬ এ মুর্শিদাবাদ জেলায় অনেক নতুন মুখ বিধায়ক হবে। স্পষ্ট ইঙ্গিত যে এই মুহূর্তে মুর্শিদাবাদ জেলায় যারা শাসকদলের বিধায়ক আছেন তারা অনেকেই টিকিট পাবেন না। কবীরের কথায়, “হুমায়ূন কবীর মুর্শিদাবাদ জেলায় একা টিকিট পাবে না, হুমায়ূন কবীরের নেতৃত্বে অনেকেই টিকিট পাবেন, দিদিই দেবে, আর মুর্শিদাবাদে নতুন ফেস (মুখ) অনেকেই এমএলএ আসবেন এই ২০২৬ এ, জোড়াফুলের প্রতীকে।” তিনি কি করবেন এই প্রশ্নের উত্তরে হুমায়ূন বলেন, “আমি কোথায় যাই আমার উপরে নির্ভর করে না। আমার নেত্রী, আমার সেনাপতি যেখানে লড়তে বলবে, সেখানেই লড়বো। মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনীতিতে হুমায়ূন কবীর অলরাউন্ডার। ব্যাটিং ও করতে পারে, বোলিং ও করতে পারে। আর প্রশাসনের সাপোর্ট ছাড়াই মানুষের ঘরে ঘরে ঢুকতে পারে। মানুষ শরবত দেয়, খেতে দেয়, ভোট দেয়। এটাই হুমায়ূন কবীরের সঙ্গে অন্যদের পার্থক্য।” হুমায়ূন কবীরের এই নতুন বক্তব্যের পরেই জেলা রাজনীতিতে হুলুস্থুল পড়ে গিয়েছে। হুমায়ূন না হয় অলরাউন্ডার, কিন্তু তিনি যা বলেছেন যে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে অনেক নতুন মুখ আসবে, সেটা কি কবীর শুধুই ফাঁকা আওয়াজ দিলেন ? নাকি আসলে ভরতপুরের এই তৃণমূল বিধায়ক এখন থেকেই জল মাপতে শুরু করে দিয়েছেন ! প্রশ্ন একাধিক জেলা নেতার।