ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাতের আবহে আমেরিকার কলোরাডোয় একটি শান্তি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হয়েছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সূত্রে খবর।
মাম্পি রায়, সাংবাদিক- ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগান, তারপরই ছোঁড়া হল আগুনের গোলা। তাতেই দগ্ধ হলেন অন্তত ৬জন। রবিবার আমেরিকার কলোরাডোর বোল্ডার শহরের একটি শপিং মলের বাইরে এমনই ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটল। ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাতের আবহে আমেরিকার কলোরাডোয় একটি শান্তি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হয়েছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সূত্রে খবর। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ইজরায়েলিদের শান্তিপূর্ণ মিছিল হচ্ছিল। ঠিক তখনই দু’হাতে দু’ধরনের বোমা নিক্ষেপ করে এক যুবক। আততায়ী মহম্মদ সাবরি সোলিমান মিশরের বাসিন্দা। বছর পঁয়তাল্লিশের সোলিমানকে গ্রেফতার করে জেরা করছেন এফবিআই তদন্তকারীরা।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে খবর, রবিবার যখন বোল্ডার শহরের পার্ল স্ট্রিটে শান্তি মিছিল চলছিল। তখনই একহাতে মলোটভ ককটেল বোমা, আরেকহাতে আগুনবোমা ছোঁড়ে মহম্মদ সাবরি সোলিমান। হামলার সময় নানানরকম স্লোগান শোনা গিয়েছে তার মুখে। কখনও ইহুদিদের শেষ করে দাও, কখনও ওরা হত্যাকারী, কখনও আবার- ফ্রি প্যালেস্টাইন বা প্যালেস্টাইনকে মুক্ত করতে হবে। এমন সব স্লোগান শোনা গিয়েছে হামলাকারী যুবকের গলায়। ঘটনা আমেরিকায় ইহুদি বিদ্বেষের অন্যতম ছবি হিসেবে উঠে এসেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২২ সালের অগাস্টে বি-২ ভিসা নিয়ে সোলিমান আমেরিকায় ঢুকেছিল। মূলত পর্যটক বা চিকিৎসার জন্য এই ভিসা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সে আমেরিকায় অবৈধভাবে থেকেছে। ডেনভারের এফবিআইয়ের ফিল্ড অফিসার মার্ক মিখালেক জানাচ্ছেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে এটা পরিকল্পিত হিংসা। জঙ্গি হামলা হিসেবেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই।
কয়েকদিন আগে আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে ইজরায়েল দূতাবাসের দুই দূতাবাসকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। ইলিয়াস রড্রিগেজ নামে এক আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু হয় সারা মিলগ্রিম ও ইয়ারন লিসচিনস্কির। সারার জন্য আংটি কিনে রেখেছিলেন ইয়ারন। কিছুদিনের মধ্যেই সারাকে প্রপোজ করতেন তিনি। কিন্তু জীবন সাজিয়ে তোলার আগেই ঝড়ে গেল তরতাজা দুটো প্রাণ। ঘটনার প্রতিবাদে ওয়াশিংটনে সরব হয়েছিলেন বহু মানুষ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বোল্ডার শহরে আগুনের গোলা ছুঁড়ে হামলা। আমেরিকার মাটিতে বারবার কেন এমন ইহুদি বিদ্বেষ দেখা যাচ্ছে ? এফবিআই অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এসব ঘটনার তদন্ত করছে।
গাজায় ইজরায়েলি যুদ্ধ নিয়ে চরম উত্তেজনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। প্রবলভাবে বেড়েছে ইহুদি বিদ্বেষমূলক অপরাধ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে ইজরায়েলপন্থী রক্ষণশীলদের একাংশ প্যালেস্টাইনপন্থী বিক্ষোভকে ইহুদি বিদ্বেষ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্যালেস্টাইনপন্থী বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অভিজাত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তহবিলও বন্ধ করা হয়েছে। এই আবহে প্রবলভাবে বাড়ছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ এবং হামলার মতো ঘটনা