বাংলাদেশের ইতিহাস মুছে ফেলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত তৎপর মহম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের টাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ছবি। বাংলাদেশ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে এই নোট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে আসতেই চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ৭১-এর ইতিহাস মুছতে এত মরিয়া কেন ইউনুস? কেন এভাবে মৌলবাদের সামনে মাথা নোয়ালেন?
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ সোমবার থেকে ঢাকায় ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে নতুন নকশার নোট পাবেন বাংলাদেশের জনগণ। প্রাথমিক ভাবে যে ২০, ৫০ এবং ১০০০ টাকার নতুন নোট তৈরি করা হয়েছে, সেগুলির কোনওটিতেই মুজিবরের ছবি নেই।
আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পরই নতুন করে নোট ছাপানোর কাজ বন্ধ করে দেয় ইউনূস সরকার। এপ্রিলের শুরু থেকে আগের নতুন নোটও বাজারে ছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ওয়াকিবহাল মহলের মত, ওই নোটগুলিতে মুজিবের ছবি থাকার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “নতুন সিরিজের এই নোটে কোনও মানুষের ছবি থাকছে না। এতে শুধুমাত্র বাংলাদেশের স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান ও প্রকৃতির ছবি থাকবে”। ২০ টাকার নোটে রয়েছে হিন্দু মন্দিরের ছবি, ৫০ টাকায় মুসলিম স্থাপত্য ও ১০০০ টাকার নোটে রয়েছে বৌদ্ধ মন্দিরের ছবি। তবে এখানেই শেষ নয়, অন্যান্য নোটেও খুব শীঘ্রই বদল আসবে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের টাকায় জায়গা পেয়েছিল বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ছবি। তবে গত বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মুজিবকন্যা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তিনি ভারতে আশ্রয় নিলে বাংলাদেশের গদিতে উপদেষ্টা সরকারের প্রধান হিসেবে বসানো হয় মহম্মদ ইউনুসকে। তখন থেকেই ইতিহাস মুছতে এক অগ্রণী ভূমিকা নেন তিনি।
তবে শুধু নোটই নয়, আসলে দেশের ইতিহাসকে সুকৌশলে মুছতে কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি স্থাপনার নাম বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের তরফে। গত ২২ মে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এসব ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত এই সমস্ত নাম বদলে, ২৪-এর জুলাই আন্দোলনের নামে করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪’ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলের নাম পরিবর্তন করে হয় ‘জুলাই-৩৬’। এবার নোট থেকেও মুজিবরকে সরালেন ইউনুস।