৫২ কোটি টাকার ৫১ কেজি সোনার গয়না। এতো বড় ঘটনা সারা দেশে সাড়া ফেলেছে। কর্ণাটক পুলিশের দাবি, এটিই দেশের বৃহত্তম সোনা চুরির ঘটনা। এর আগে এত টাকার সোনা ব্যাঙ্ক থেকে লুট হয়নি বলেই জানা গেছে।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- দেশের অন্যতম বড় ব্যাঙ্ক ডাকাতির সাক্ষী হয়ে থাকল কর্ণাটকের বিজয়পুরা। বিজয়পুরা জেলায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের মানাগুলি শাখা থেকে ডাকাতি হয় ৫২ কোটি টাকার ৫১ কেজি সোনার গয়না। এতো বড় ঘটনা সারা দেশে সাড়া ফেলেছে। কর্ণাটক পুলিশের দাবি, এটিই দেশের বৃহত্তম সোনা চুরির ঘটনা। এর আগে এত টাকার সোনা ব্যাঙ্ক থেকে লুট হয়নি বলেই জানা গেছে। সূত্রের খবর, ২৩শে মে সন্ধে ৬টা থেকে ২৫ মে দুপুর সাড়ে ১১টার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটে। সেই সময় ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল, ফলে ডাকাতির বিষয় কিছুই জানা যায়নি। ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ২৬ মে সোমবার সকালে ব্যাঙ্কে কর্মীরা ঢোকার পর।
বিজয়পুরার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ডাকাতিতে প্রায় ৬ থেকে ৮ জন জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। ডাকাত দলটিকে পাকড়াও করতে ৮টি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। সেখানকার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, চোরেরা পরিকল্পিত করে একাজ করেছে। প্রতি মাসের চতুর্থ শনিবার ও রবিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকে। সেই সুযোগকে কাজে লাগানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চোরেরা ব্যাঙ্কে ঢোকার জন্য নকল চাবি ব্যবহার করে। ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা অ্যালার্ম বন্ধ করে দেয়। এমনকি সিসিটিভি ক্যামেরাও নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এরপরে তারা ব্যাঙ্কের লকার ভেঙে সোনার গয়না নিয়ে পালায়। সেই সঙ্গে পুরো নেটওয়ার্ক ভিডিও রেকর্ডারটিও সঙ্গে নিয়ে চলে যায়। পুলিশের কাছে বিস্ময়ের ঘটনা হল, ডাকাত দলটি একটি কালো রঙের পুতুল রেখে যায় ঘটনাস্থলে। যা দেখে পুলিশ ধারণা, চুরির ঘটনাকে আধ্যাত্মিক বা তান্ত্রিক কার্যকলাপ বলে মনে করিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে তারা। এই ঘটনার সঙ্গে মিল রয়েছে সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া কর্নাটকেরই আরও ২টি বড় ব্যাঙ্ক ডাকাতির।
চলতি বছরের ১৭ই জানুয়ারি, ম্যাঙ্গালুরু জেলার কোটেকরের একটি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে ১২ কোটি টাকার সোনার গয়না লুট হয়। সেই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগে গতবছর, ২০২৪ সালের ২৮শে অক্টোবর, দাভানগেরে জেলার নিয়ামথি শহরে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার একটি শাখা থেকে ১৩ কোটি টাকার সোনা চুরি হয়। সেই ঘটনাতেও ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও বিজয়পুরার ওই ব্যাঙ্কে ঘটে যাওয়া চুরির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশের ধারণা, অপরাধীরা স্থানীয় নয়। তারা বড় কোনও পেশাদার দলের সদস্য। তদন্ত চলছে এবং সন্দেহভাজনদের ট্র্যাক করতে বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান চালাচ্ছে কর্ণাটক পুলিশ।