হানিমুনে গিয়ে কেউ যে নিজের স্বামীকে হত্যা করতে সুপারি দিতে পারেন্তা এতদিন ভাবা না গেলেও রাজা রঘুবংশীর হত্যাকান্ড সেটাও প্রমাণ করে দিল। প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে মানুষের বিবেক নিয়ে, প্রশ্ন উঠছে এরপর মানুষ আদৌ আর মানুষকে বিশ্বাস করতে পারবেন?
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ স্বামীকে খুনের পর উত্তরপ্রদেশে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন সোনম। দীর্ঘ ১৭ দিন ধরে পুলিশকে নাস্তানাবুদ খাইয়েছেন কিন্তু তাতেও তো শেষ রক্ষা হল না। কিভাবে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন সোনম?
সোনমের নিজের ভুলই ধরিয়ে দিল তাঁকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর প্রায় সাড়ে ৩টে নাগাদ গাজ়িপুরের নন্দগঞ্জ এলাকায় বারাণসী-গাজ়িপুর রোডের উপর অবস্থিত কাশী ধাবায় পৌঁছোন সোনম। কাঁদতে কাঁদতে ধাবার মালিকের কাছ থেকে তাঁর ফোনটি চান। সেই ফোন থেকেই ভিডিয়ো কল করেন বাড়িতে। আর সেই ভিডিও কলের সূত্র ধরেই পুলিশের জালে ধরা পড়লেন সোনম।
সোনম তাঁর ভাই গোবিন্দ রঘুবংশীকে ভিডিও কলে জানান, তিনি গাজিপুরে রয়েছেন। ফোন রেখেই সোনমের ভাই ইন্দোর পুলিশকে খবর দেন। সন্দেহজনক কিছু আঁচ করে ধাবার মালিকও আপৎকালীন নম্বর ১১২-তে ফোন করেন। সঙ্গে সঙ্গে ইন্দোর পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয় গাজিপুর পুলিশের সঙ্গে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় সোনমকে।
সোনমকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে গাজ়িপুর পুলিশ। কী ভাবে তিনি শিলং থেকে গাজ়িপুরে পৌঁছোলেন, গত ১৭ দিনে তাঁর সঙ্গে কী কী ঘটেছে, সবই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানতে চাওয়া হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রাজের সঙ্গে বিয়ের আগে সোনমের সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও দু’জনের যোগাযোগ ছিল। সেই কারণেই সোনম স্বামীকে খুন করেছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সিমলায় যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও, শেষ মুহূর্তে মেঘালয়ে যান রাজারা। রাজার সোনার চেন পরে যাওয়া নিয়ে মা বারণ করে রাজা তখন বলেন যে, সোনম পরতে বলেছে। সোনমের প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা সোনমের অফিসেই কাজ করেন। সোনমের সানমাইকারের ব্যবসা রয়েছে। সুপারি কিলাররা হল ভিকি ঠাকুর, আকাশ এবং আনন্দ । সোনমের মোবাইল ট্র্যাকিং চলছে. ভাকুপর বনশাই নামের স্থানীয় এক ট্যুর গাইড পুলিশকে জানান, মাওলাখিয়াত থেকে নোনগ্রিয়াট পর্যন্ত ট্রেকিংয়ে তিনিই নিয়ে গিয়েছিলেন দম্পতিকে। প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছিল। এরপর তাঁরা হোমস্টেতে ফিরে যান। পরদিন তাঁরা গাইড নিতে চাননি। বলেছিলেন,এই রাস্তা তাঁদের চেনা।সেদিনই শেষ যখন তাঁদের দেখা যায় সঙ্গে ছিল আরও তিন পুরুষ। সব মিলিয়ে এই ঘটনা যে ইঙ্গিত করছে সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে তা স্পষ্ট।