কোভিডের শুরুর দিনগুলোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে বারংবার রাস্তায় নেমেছেন। প্রতিটা মুহূর্তে পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন। এই মুহূর্তে নতুন করে যখন চোখ রাঙাচ্ছে করোনা, তখন নবান্নে প্রস্তুতি বৈঠক সেরে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করলেন আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ রাজ্যে করোনা আক্রান্তের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। সোমবারই জানা গিয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে এক করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে, এই মরশুমে এই নিয়ে রাজ্যে দ্বিতীয় মৃত্যু। আক্রান্তের সংখ্যা গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৫৪ জন, এই নিয়ে মোট আক্রান্ত ৭৪৭ জন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝেই সোমবার নবান্নে এক জরুরি প্রস্তুতি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সমস্ত দফতরের আধিকারিকরা যার মধ্যে আছেন স্বাস্থ্য, পুলিশ, কর্পোরেশন সহ সকলেই। হাজির ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমরাও।
অতীতের কথা মাথায় রেখেই আগাম প্রস্তুতি সেরে ফেলার পথে রাজ্য। বেড কিংবা অক্সিজেন সংকট যাতে কোনভাবেই না হয় সেদিকে কড়া নজর রেখেছে রাজ্য। এই প্রস্তুতি বৈঠক সেরে নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন সাধারণ মানুষকে যে ভয় পাবেন না। আতঙ্কিত হওয়ার মত এখনও কিছু হয়নি। সকলকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি করোনা আর মহামারীর আকার ধারণ করবে না। তবে আমরা সমস্ত দফতরকে নিয়ে আজ বৈঠক করেছি প্রস্তুতির বিষয়টা মাথায় রেখে’। কেউ যাতে ভয় না পান সেকথা মাথায় রেখে তিনি বলেন, ‘চিন্তা করার জন্য নয় কিন্তু যদি কোন সময় আচমকা পরিস্থিতির তেমন অবনতি হয় তাহলে যাতে সরকার প্রস্তুত থাকতে পারে সেই কারণেই এই বৈঠক’। ইতিমধ্যেই যে ২ জনের মৃত্যু ঘটেছে এই রাজ্যে, তাঁরা শুধু করোনা আক্রান্ত ছিলেন এমন নয়, দুজনেই কো-মরবিড ছিলেন। সেই কথা মাথায় রেখে মমতা বলেন, ‘কো-মরবিডিটি যাদের আছে তাদের ক্ষেত্রে তো এটা একটা ফ্যাক্টর’। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের উপদেশ দিয়ে বলেন তারা যেন ডাক্তার দেখিয়ে যথাযথ চিকিৎসা করান। তিনি সকলকেই অন্মুরোধ করেন যেন এই চিকিৎসা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো যায় কারণ সেক্ষেত্রে অযথা বেশি টাকা খরচা হবে না কারোর। তিনি বলেন এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন তা সব সরকারি হাসপাতালে আছে। এছাড়াও যেহেতু সকলেই প্রায় ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন তাই অযথা চিন্তার কিছু নেই।
পরিস্থিতি একেবারেই শঙ্কাজনক নয় বলেই বার্তা দেন তিনি। সাধারণ সর্দি কাশি বা জ্বরের মতোই এটা একটা ইনফেকশন। ভারতবর্ষে এত কোটি মানুষের বাস, সেখানে মাত্র ছয় সাড়ে ছয় হাজার এই ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে। তাই এখনই আলাদ করে কোন ব্যবস্থা এই মুহূর্তে নেওয়া হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত কিছুই স্বাভাবিক থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তবে রাজ্য সরকার সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত সেকথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।