ওয়েব ডেস্ক: “মেরা ভারত মহান”…. সে কথা আবারও প্রমানিত হল। উড়ি, পুলওয়ামা কাণ্ডের পর যখন ক্ষোভে ফুঁসছে গেটা দেশ তখনও সীমান্ত দেখা গেল মানবিকতার নজির। এতকিছুর মধ্যেও ভারতীয়দের সহানুভুতির মৃত্যু হয়নি। নদীতে পাকিস্তান থেকে উত্তর কাশ্মীরে ভেসে এসেছিল সাত বছরের আবিদ শেখের মৃত দেহ। শিশুটিকে দেখতে পায় উত্তর কাশ্মীরের আচুয়া গ্রামের বাসিন্দারা। মৃতদেহ দেশের গণ্ডি পার করে ভিসা পাসপোর্ট ছাড়াই চলে এসে অন্য দেশে।
নিথর সেই দেহের প্রতিও মানবিকতার প্রকাশ করল স্থানীয় বাসিন্দারা। নদীর জল থেকে মৃতদেহ তুলে রীতিমতো প্রথা মেনে মসজিদে প্রার্থনা করা হল। দেহে যাতে বিকৃতি বা পচন ধরতে শুরু না করে তাই ছোট্ট আবিদের দেহ গ্রামবাসীরা বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করেও রাখে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে যাত্রীবাহী- মালবাহী ট্রেন সংঘর্ষ,মৃত ১১ জখম ৬০জল সমস্যা, রেলপথে ৫০ ওয়াগন জলের ট্যাঙ্কার পৌছবে চেন্নাইয়ে
শেষমেশ রীতিমতো প্রথা ভেঙে কাঁটাতার পার করে মৃতদেহ ফিরিয়ে দেওয়া হল পাকিস্তানের পরিবারে হাতে। সরকারি প্রটোকল না মেনেই মাইন ভর্তি গুরেজ সীমান্ত দিয়ে রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাত বছরের মৃত আবিদ শেখের দেহ তুলে দেওযা হয় পরিবারের হাতে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বালটিস্তানের একটি গ্রামের বাসিন্দা আবিদ গত সোমবার থেকে নিখোঁজ ছিল। স্কুল যাওয়ার পথে আবিদ বুরজিল নালায় পড়ে যায়, এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর ওই দেহ ভাসতে ভাসতে চলে আসে কিষাণগঙ্গায়।
আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে বিপত্তি, ঝড়ের মুখে পড়ে আপৎকালীন অবতরন অষ্ট্রেলিয়া গামী বিমানেরপাকিস্তানে যাত্রীবাহী- মালবাহী ট্রেন সংঘর্ষ,মৃত ১১ জখম ৬০
সেখানেই আচুয়া গ্রামের বাসিন্দারা তাকে ভাসতে দেখান। মৃত শিশুর পরিচয় নিয়ে প্রথম তারা অজ্ঞাত থাকলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারেন পাকিস্তানি এই শিশুটি সোমবার থেকে নিখোঁজ।
ভিডিও দেখে শিশুর পরিবার তার দেহগ ফিরে পাওয়ার জন্য কাতর আবেদন জানায় গ্রামের মানুষের কাছে। কিন্ত আচুয়া গ্রামে কোন মর্গ না থাকায় দেহ সংরক্ষণ নিয়ে সমস্যায় পরেন গ্রামবাসীরা। শেষে পাহার থেকে বরফ কেটে এনে সংরক্ষণ করা হয় ছোট্টো আবিদের দেহ।
আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে বিপত্তি, ঝড়ের মুখে পড়ে আপৎকালীন অবতরন অষ্ট্রেলিয়া গামী বিমানের
বান্দিপোরার ডেপুটি কমিশনার তৎক্ষণাৎ পাক সেনাকে বিষয়টি জানান। পাকিস্তানের সেনা বাহিনীর তরফে জানানো হয় সরকারি প্রোটকল মেনে তারা দেহ ফেরৎ নেবে
গুরেজ়ের ২০০ কিলোমিটার দূরে কুপওয়ারা জেলার তিতওয়াল থেকে দেহটি সংগ্রহ করবে তারা। এরপর ভারতীয় সেনা বাহিনীর তরফে মৃতদেহ নিয়ে সেখানে গেলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তরফ থেকে সেখানে কেউ হাজির থাকেনি।
আরও পড়ুন:বাবার কেমো চালানোর জন্য ১০ ঘন্টা গেম খেলে টাকা উপার্জন ১৩ বছরের জাইলের
এরফলে মৃতদেহ নিয়ে ফিরে আসতে হয় ভারতীয় সেনাকে। শেষে প্রটোকল ভেঙে বৃহস্পতিবার সকালে মাইন পাতা গুরেজ সীমান্ত পার করে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় আবিদের পরিবারের হাতে। সীমান্ত পারের দুই গ্রামেরই বাসিন্দাদের বক্তব্য মানবিকতার চরম নজির এর আগে আর কখনও দেখেনি তারা।