ওয়েব ডেস্ক: বেলাশেষে সিনেমাটার কথা মনে আছে? ছবির মাঝে যখন একটা সময় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রী স্বাতীলেখা সেনগুপ্তকে ছেড়ে চলে গেলেন।
কারণ তিনি চেয়েছিলেন তাঁর অবর্তমানে যেন তাঁর স্ত্রী অথর্ব্য না হয়ে পড়েন। যেন নিজের কাজটা নিজেই করতে পারেন।
সাধারণ ব্যাঙ্কের কাজ থেকে শুরু করে বাজার করা, গ্যাস বুকের মতো সংসারের খুটিনাটির খেয়াল যেন তাঁর স্ত্রী নিজেই রাখতে পারেন।
যেন তাঁর কোনোদিন একটা তৃতীয় হাতের প্রয়োজন না পড়ে। এমনই একটি ঘটনার কিছুটা যেন মিলে গেল ঠিক এই সিনেমার চিত্রনাট্যের সঙ্গে।
স্বামী চলে যাওয়ার পরে দীপ্তি পড়েছিলেন অথৈ সমুদ্রে। কিভাবে রোজগার হবে? কি ভাবেই চলবে এই গোটা সংসার? দীপ্তি তো কোনোদিন বাড়ির বাইরের কোনো কাজই করেনি।
আরও পড়ুন : শিশু ধর্ষণে ঝুলতে হবে এবার ফাঁসিতে, জানাল মোদী সরকার…
কিন্তু কখন ইচ্ছে না থাকলেও উপায় বের করে নিতে হয়। ঠিক তেমনটাই করলেন উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুনের ছোট্ট গ্রাম কাপকোট ভারারির বাসিন্দা দীপ্তি জোশী।
২০১৪ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর কিছুটা বাধ্য হয়ে ও পেটের টানেই পাহাড়ী রাস্তার এক ধারে খুলে ফেলেন টিন দিয়ে ঘেরা একটি ছোট্ট চায়ের দোকান।
তবে খুব একটা পরিচিতি না থাকার ফলে মাঝেমধ্যে কয়েকজন পর্যটক ও স্থানীয় লোকেরা ছাড়া কেউই তেমন চা-কফি খেতে আসত না। ফলে উপার্জনও হত নামমাত্রই। তাতে গোটা পরিবারের পেট চালানো বেশ মুশকিলেরই হত। তবে সময় তো সবসময় সমান থাকে না। তা বদলায়।
একদিন ২০১৭ সালে তাঁর দোকানে আসে দিল্লির কিরণ নাদার মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস-এঢ় পড়ুয়া। চা-কফি সহযোগে দীপ্তির মুখে শোনে তাঁর স্বামীর মৃত্যু ও এই দোকান তৈরির গল্প।
আর সেই পড়ুয়ারাই বদলে দিল দীপ্তি ও তার টি স্টলের ভাগ্য। সেই ছোট্ট গুমটি চায়ের দোকানের চেহারা বদলে যায়, কপালে জোটে শিল্প্র ছোঁয়া।
তাতে রঙ করে তার উপর কুমায়ুন সংস্কৃতির পরিচয় বহনকারী শিল্পকলা এঁকে দেন সেই পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে হাত লাগায় স্থানীয় কিছু কচিকাচাও। জোশী টি স্টল হয়ে ওঠে জোশ ক্যাফে। আর অনটনে দিন কাটাতে হয় না দীপ্তি ও তার পরিবারকে। শিল্পকলার টানে পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই এখন ভীড় জমাচ্ছে “জোশ ক্যাফে” তে”।