Date : 2024-04-30

সংসার চালানোর মতো করেই সরকার চালাই। একশো দিনের বকেয়া মেটানোর প্রসঙ্গে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : রাজ্যের ২১ লক্ষ বঞ্চিত জব কার্ড হোল্ডাদের বকেয়া টাকা ২১ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘোষণার পরই বিরোধীরা বলতে শুরু করেছেন এই বিপুল পরিমান টাকা সরকার কোথা থেকে পাবে ! বুধবার হাওড়ার সাঁতরাগাছির সভা থেকে সেই অর্থের সংস্থান নিয়ে নিজের অবস্থান খোলসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত ২ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার, রেড রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন ২১ ফেব্রুয়ারি এরাজ্যের একশো দিনের কাজের ২১ লক্ষ বঞ্চিত জব কার্ড হোল্ডারদের টাকা দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী এটাও বলেছিলেন, এইসব বঞ্চিত মানুষ, যাদের তিন বছরের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার, সেই তিন বছরের সমস্ত বকেয়া টাকা তিনি মিটিয়ে দেবেন। রাজ্য সরকার‌ই এই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। প্রসঙ্গতঃ একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের পাওনা প্রায় ৬,৯১১ কোটি টাকা। এই টাকার মধ্যে মেটিরিয়াল বাবদ পাওনা প্রায় ৪,১০০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ২,৮০০ কোটি টাকা জব কার্ড হোল্ডাদের মজুরি বাবদ বকেয়া। এই মজুরির টাকাটাই রাজ্য দেবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো ইতিমধ্যেই রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে এস‌ওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেজার) জারি করা হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই রাজ্যের বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয় রাজ্যের মানুষের করের টাকা থেকে নিজেদের চুরি, দূর্নীতির দায় মেটাতে চাইছে সরকার। বামেদের বক্তব্য ছিলো সরকারের কাছে যদি এত টাকা ছিলোই তাহলে আগে দিলো না কেন ? কেন বঞ্চিত করা হলো একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের। বিরোধীদের আনা এইসব অভিযোগের সরাসরি কোনো জবাব না দিলেও বুধবার হাওড়ার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন ঠিক কোথা থেকে এই টাকার বন্দবস্ত তিনি করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “মা-বোনেরা সংসার চালানোর সময় কিছু কিছু করে টাকা বাঁচিয়ে রাখেন। আমিও তেমনভাবেই সরকার চালাই।” এই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী ‘লক্ষীর ভান্ডার’ প্রকল্পের বিষয় সামনে এনে ইঙ্গিত দেন এবারের বাজেটে ‘লক্ষীর ভান্ডার’ প্রকল্পের ক্ষেত্রে বড় কিছু ঘোষণা করা হতে পারে। তাঁর কথায়,” আমি যতটা পারছি, করছি। আগামিদিনে কি করবো সেটা শুনলে চমকে যাবেন।” তিনি আরও বলেন, “আমি মা-বোনেদের কোন‌ও টাকা বন্ধ হতে দেবো না। আমি জোতদার জমিদার ন‌ই। আমি আপনাদের পাহারাদার। আমার একটু সময় লাগবে, কিন্তু আপনাদের মুখে আমি হাসি ফোঁটাবোই।” এদিকে নবান্নের আমলা মহল সূত্রে খবর, শুধু ‘লক্ষীর ভান্ডার’ ই নয়, এবারের বাজেটে আবাস যোজনা নিয়েও বড় কিছু ঘোষণা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।