Date : 2024-04-27

Durga Puja : মা নয়, বাড়ির মেয়ে— ১৬২ বছরে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো

সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, রিপোর্টার : সাবেকি বাড়ির পুজোর একটা আলাদা আমেজ আছে। সারা কলকাতা জুড়ে যে সমস্ত সাবেকি বাড়ি আছে তাদের মধ্যে অন্যতম উত্তর কলকাতার চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজো। যে পুজো এবার পদার্পণ করতে চলেছে ১৬২ বছরে। আর যে পুজোকে ঘিরে লুকিয়ে আছে একাধিক গল্প, বহু নিয়ম।

জানা যায় ১৮৬০ সালে রামচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার স্ত্রী দুর্গাদাসী দেবীর কথায় বাড়ির ঠাকুরদালানে প্রথমবার দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন। সেই থেকে এই বাড়িতে পুজো চলছে। আর এভাবেই কেটে গিয়েছে ১৬১ বছর।

এই বাড়ির পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একাধিক নিয়ম। যা বহন করে চলে এক ঐতিহ্যকে। কাঠামো পুজো হোক বা ভোগ রান্না— সবেতেই কিছু নিয়ম একেবারে আলাদা করে রেখেছে এই বাড়ির পুজোকে।

চট্টোপাধ্যায় বাড়ির সদস্যরা জানালেন, এখানে কাঠামোপুজো অনুষ্ঠিত হয় জন্মাষ্টমী তিথিতে। একটি গরান গাছের ডাল দিয়ে পুজো করা হয় কাঠামো। সেই ডাল প্রতিমার সঙ্গেই নিরঞ্জন হয়। কাঠামো পুজোর পর সেই লাঠি যায় কুমোরটুলিতে। সেখানেই  প্রতিমাশিল্পী নিমাই পাল তৈরি করেন মা দুর্গার মূর্তি। মায়ের পরনে থাকে বেনারসী শাড়ি। গা-ভরা সোনার সাজ।

পুজোর নৈবেদ্য সাজানো ফল কাটা এই সব কাজের দায়িত্ব বাড়ির মেয়েদের ওপর থাকলেও ভোগ রান্না করেন ছেলেরা। আর তাই বাড়ির ছেলেরা অপেক্ষা করেন উপনয়নের জন্য কারণ তাহলেই পাওয়া যাবে ভোগ রান্নার ছাড়পত্র। এক অভিনব নিয়ম রয়েছে দশমীর দিনেও। দশমীতে মাকে পান্তা ভোগ নিবেদন করা হয়। বাড়ির সদস্যরা মনে করেন পেট ঠান্ডা করে মাকে কৈলাসে পাঠাতেই এই নিয়ম।

এই বাড়িতে এখনও আদি আসনেই মাকে বসানো হয়। এখানে দুর্গাকে বাড়ির মেয়ে হিসাবেই গণ্য করা হয় তাই দশমীর দিন গান গেয়ে, কনকাঞ্জলি দিয়ে মাকে বলা হয় আবার আমাদের বাড়িতে এসো মা।

পুজোর চারটে দিনকে ঘিরে অপেক্ষায় উদগ্রীব থাকেন বাড়ির সমস্ত সদস্যরাই। বাইরে যারা থাকেন তারাও আসেন এই সময়ে। আর এই চার দিনেই সকলে খুঁজে নেন সারা বছরের ভালো থাকা