Date : 2024-04-27

নব জোয়ারে ভেসে তৃণমূলে বায়রন

রুমঝুম সামন্ত, নিউজ ডেস্ক; প্রথম থেকেই গুঞ্জন চলছিল তাঁকে নিয়ে। যদিও সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে টাফ টক উইথ ঋতব্রততে সাগরদিঘির নির্বাচিত বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস জানিয়েছিলেন, “দল পরিবর্তনের কোনও সম্ভবনা নেই।” 24 মার্চ একান্ত স্বাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কংগ্রেসেই ছিলেন, কংগ্রেসেই আছেন এবং ভবিষ্যতেও কংগ্রেসেই থাকবেন।” তিন মাস ঘুরতে না ঘুরতেই ভোল বদলে সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে নাটকীয় ভাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বায়রন বিশ্বাস যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। স্বাধীনতার পর রাজ্যে বিধানসভা ফের কংগ্রেস শূন্য। 29 ডিসেম্বর 2022 এ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত সাহা প্রয়াত হওয়ায় সাগরদিঘির আসনটি খালি হয়ে যায়। 2011 সাল থেকে তিনিই ছিলেন মুর্শিদাবাদের একমাত্র তৃণমূল বিধায়ক। 27 ফেব্রুয়ারি সাগরদিঘির উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন বায়রন বিশ্বাস।

দলবদল নতুন নয় তবে গত এক দশকে দলবদল যেন নতুন মাত্রা যোগ করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। 21শের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেমন দল বেঁধে অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে, তেমনই ফল প্রকাশের পর একের এক নেতা গেরুয়া শিবির ছেড়ে যোগ দেন ঘাসফুল শিবিরে। এবার নজর রাখা যাক একুশের আগে-পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নেতাদের দিকে –

মানস ভুঁইয়া
বিরোধীরা বলেন, সবংয়ের ছাত্র খুনের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর জন্যেই বাধ্য হয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন
তৎকালীন কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া।

বাবুল সুপ্রিয়
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৎকালীন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
পরবর্তীকালে বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন তিনি।

অর্জুন সিং
তৃণমূলের হাত ধরে রাজনীতিতে এলেও পরবর্তীকালে দল বদলান অর্জুন সিং।
বিজেপির টিকিটে জয়ী ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং 22 মে 2022 গেরুয়া শিবির ছেড়ে যোগ দেন ঘাসফুল শিবিরে।
যদিও তিনি কতদিন থাকবেন তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।

মুকুল রায়
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন 21-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে।
বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক পদে জয়ী হন মুকুল রায়।
সে বছরই বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।
যদিও তাঁর কথার সুর মনে ধরছে না তৃণমূলের।

এছাড়া, আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল,
বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস,
রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী,
কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়,
বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ বিজেপি ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে।

দল বদলের হিড়িকে রাজ্য বিধানসভায় এখন বিজেপির 75টি আসন থেকে কমে হয়েছে 69। অন্যদিকে শূন্য থেকে 1 হলেও আবার বিধানসভায় শূন্যেই থেকে গেল কংগ্রেস। শুধুমাত্র আইএসএফের 1জন বিধায়ক রয়েছে বিধানসভায়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সাগরদিঘির বিধায়কের রাজ্যের শাসক দলে যোগ দেওয়া আদৌ বুমেরাং হয়ে ফিরবে না তো? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের।