Date : 2024-04-27

ভবানীপুরের নিখোঁজ ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার নিমতায়

সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- সোমবার ব্যবসায়িক কাজে বেরোচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ভবানীপুরের ব্যবসায়ী। স্ত্রীয়ের সঙ্গে শেষ ফোনে কথা হয় দুপুরে। তারপর থেকেই মোবাইল ফোন সুইচ অফ হয়ে যায় ভব্য লাখানির। রাতভর খোঁজ চালানোর পরেও যখন তাঁকে পাওয়া যায় না, মঙ্গলবার বালিগঞ্জ থানার দ্বারস্থ হয় ব্যবসায়ীর স্ত্রী নেহা লাখানি। অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৬৫ ধারায় অপহরণের মামলা রুজু করে পুলিশ। তদন্তে নেমে ভবানীপুরের ব্যবসায়ীর মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যায় জোড়াবাগান থানা এলাকায়। সেখানেই উদ্ধার হয় তাঁর মোবাইল। সেই ফোনের সূত্র ধরে জানা যায়, ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর ব্যবসার অংশীদার ও বন্ধু নিমতার বাসিন্দা অনির্বান গুপ্তর শেষ কথা হয়েছিল। এরপরই বালিগঞ্জ থানা, লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখাকে সঙ্গে নিয়ে নিমতা থানার পুলিশের সহায়তায় হানা দেয় নিমতার প্রবোধ মিত্র লেনে অনির্বান গুপ্তর বাড়িতে। সেখানেই ব্যবসায়ী অপহরণের রহস্যভেদ হয়।

জলের ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত ব্যবসায়ীর দেহ। খুন করার পর জলের ট্যাঙ্কে বস্তাবন্দী দেহ ফেলে রাতারাতি বাইরে থেকে পাঁচিল গেঁথে দেওয়া হচ্ছিল। পুরো পাঁচিল তোলার আগেই পুলিশ দেহ উদ্ধার করে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অনির্বান গুপ্ত সহ আরও একজনকে। ওই ব্যবসায়ী শেষবার স্ত্রীকে ফোনে জানান তাঁর ব্যবসায়ীক বন্ধুর বাড়িতে নিমতায় যাচ্ছে। ওই ব্যবসায়ীর বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে তাঁর কথায় একাধিক অসঙ্গতি পাওয়া যায়। এরপর তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতেই রহস্যের সমাধান হয়। মৃত ব্যবসায়ীর সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত করা হয়। মাথার পিছনে ক্রিকেট ব্যাট ও উইকেট দিয়ে মারা হয় বলে জেরায় স্বীকার অভিযুক্তদের। এছাড়াও শরীরে পাওয়া গেছে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। যা স্পষ্ট করেছে পিটিয়ে খুনের তত্ত্ব। খুনের কয়েকদিন আগেই ব্যাট ও উইকেট কেনা হয়েছিল। খুন করে পাঁচিল তোলা হবে বলে আগে থেকেই ইমারতি দ্রব্য কিনে বাড়িতে মজুত করেছিল মূল অভিযুক্ত অনির্বান গুপ্ত। ইমারতি ব্যবসায়ী ও খেলার সরঞ্জামের দোকানদারকে নিমতা থানায় ডেকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বড়বাজারের বাগরি মার্কেটের ওষুধ ব্যবসায়ী ব্যবসার কারণে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল অনির্বান গুপ্তকে। বিগত ৩-৪ মাস ধরে সেই টাকা ফেরত চাইলেও অনির্বান তা দিচ্ছিলেন না। টাকা ফেরত না দেওয়ার পরিকল্পনাতেই খুন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। টাকার জন্যই কি খুন, এই ঘটনায় আর কেউ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত পুলিশের।