সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : ২০১৫ সালের বাজেট ভাষণে ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য একটা নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ওই বছরই পশ্চিম মেদিনীপুরে এক প্রশাসনিক সভায় প্রকল্পের শুভ সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিস্কপ্রসূত এই প্রকল্পের নাম ‘সবুজ সাথি’। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকারি স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাইকেল দেওয়া হয়। এবার সেই সাইকেলের দু’চাকায় সওয়ার হয়ে সারা দেশে প্রথম স্থানে পৌঁছালো পশ্চিমবঙ্গ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সারা দেশ জুড়ে যে সার্ভে করা হয়েছিলো তার রিপোর্ট সম্প্রতি সামনে এসেছে। এই সার্ভের পোশাকি নাম ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে-৫ (২০১৯-২০২১)’। বেশকিছু বিষয় নিয়ে এই সার্ভে করা হয়। তারমধ্যে একটি বিষয় ছিলো কতগুলো পরিবারের নিজস্ব সাইকেল রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী এক্ষেত্রে সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে পশ্চিমবঙ্গ।
পশ্চিমবঙ্গের ৭৮.৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি সাইকেল রয়েছে। যা সারা দেশের নিরিখে সর্বাধিক। এই হার সার্বিকভাবে দেশের হার (৫০.৪ শতাংশ)-এর থেকেও বেশি। পশ্চিমবঙ্গের পরে রয়েছে যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। সেরাজ্যে এই হার ৭৫.৬ শতাংশ। ৭২.৫ শতাংশ পরিবারে সাইকেল রয়েছে তৃতীয় স্থানে থাকা উড়িষ্যায়। এছাড়া ছত্তিশগড়ে ৭০.৮ শতাংশ, অসম এ ৭০.৩ শতাংশ পরিবারে সাইকেল অন্যতম বাহন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাট অবশ্য ২৯.৯ শতাংশ হারে অনেকটাই নিচের দিকে রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৭৯ শতাংশ পরিবারের হাতে সাইকেল থাকার নেপথ্যে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘সবুজ সাথি’-র অবদান অনেটাই বলে মনে করছেন সরকারি আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের মতে, এক তো ছাত্র ছাত্রীদের হাতে সাইকেল তুলে দেওয়ার ফলে স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছা অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি গ্রামঞ্চলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পরিবারের বড়রা এই সবুজ সাথি-র সাইকেল নিয়েই তাদের দৈনন্দিন কাজ সারছেন। যা তাদের আর্থিকভাবেও সাহায্য করছে। প্রসঙ্গতঃ বলা যায় ২০১৫ সালে এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত প্রায় এক কোটির ও বেশি সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। যা এক কথায় রেকর্ড।