Date : 2024-04-26

ক্ষমতায় না থাকলেও দাদাগিরি বহাল রয়েছে এখনও

রুমঝুম সামন্ত, নিউজ ডেস্ক : কলেজের ছাত্রছাত্রী দের ভর্তি হওয়া থেকে কলেজের যে কোনও অনুষ্ঠান, সবেতেই দাপট থাকে ছাত্র সংসদের । সে যেই দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন। ছাত্র সংসদের দাদাগিরির জনপ্রিয়তা সব কলেজেই দেখা যায়। ছাত্র-ছাত্রী দের কোনও সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি আন্দোলন বিক্ষোভ এমনকি গোষ্ঠী কোন্দল সবেতেই নাম জড়ায় এই ছাত্র সংসদের । বর্তমানে রাজ্যের বেশির ভাগ কলেজই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অধিনস্ত। তবে কলেজ গুলিতে নির্বাচন হয়নি বহুদিন। তাহলে কি করে এখনও তাদের দৌরাত্ম্য বহাল রয়েছে? এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

রাজ্যের কলেজ গুলিতে শেষ নির্বাচন হয় ২০১৭ সালে। তারপর থেকে প্রায় ৫ বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। তাহলে নিয়ম মতো ছাত্র সংসদের কোনও অস্তিত্ব না থাকারই কথা। কিন্তু অধিকাংশ কলেজে ছাত্র সংসদ যাদের দখলে ছিল তাদেরই দৌরাত্ম্য বহু জায়গায় বহাল রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বহুবার। কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রন নাকি তাদেরই হাতে। অনেক সময় বিপুল টাকা ব্যয়ে কলেজে-কলেজে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ এদের হাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বিস্তর টাকা তুলে দেয় বলে অভিযোগ। সঙ্গীত শিল্পী কেকে-র মৃত্যুর পর থেকে এই সমস্ত অভিযোগ আবারও জেগে উঠেছে। এখন প্রশ্ন উঠছে……..
কোভিডের কারণে প্রায় 2 বছর বন্ধ ছিল কলেজ। তাহলে কলেজ ফেস্টে গান গাওয়ার জন্য মুম্বই থেকে শিল্পী আনার অর্থ এল কোথা থেকে?

প্রায় 2-3 বছর ধরে কলেজগুলিতে কোনও বড় অনুষ্ঠান হয়নি বলা যায়। অনেক বছর পর মুম্বাই থেকে বড় শিল্পী নিয়ে এসে এই রকম কলেজ ফেস্ট হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ে। উল্টোডাঙ্গার স্যার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের কলেজ ফেস্টে অনুষ্ঠান করার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন সঙ্গীত শিল্পী কেকে। তারপরই তাঁর মৃত্যু ঘটে। এই নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। বিরোধীরা বলছে এটি নাকি কলেজের অনুষ্ঠানই নয়। বিরোধীদের তির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকে।
যদিও অধ্যক্ষদের একাংশের অভিযোগ, রাজ্যের কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি বহুদিন। টিএমসিপি নেতা-কর্মীদের নিত্য আনাগোনা কলেজে। পড়ুয়াদের ভর্তির সময় এই সব নেতা-কর্মীরা টাকা তোলে। কলেজে মেরামতির জন্য আসা ঠিকাদারের থেকেও টাকা তোলা হয়। অফুরন্ত টাকার জোগান এভাবেই হয়ে আসছে। ফলে নামি সঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান বড় কোনও বিষয় নয়।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে পাল্টা জবাব দেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। 2 বছর কোভিডের কারণে কলেজে কোনও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়নি। কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় প্রত্যেকটি পড়ুয়া ইউনিয়ন ফি বা অনুষ্ঠান ফি দিয়ে থাকে। সেই সব বিপুল পরিমান টাকা কলেজ তহবিলে জমা ছিল। সেই টাকা দিয়েই কেকে-র অনুষ্ঠান হয়েছে। পর পর দুটি কলেজের অনুষ্ঠানে আসায় পারিশ্রমিক একটু কম দিতে হয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে যে ছাত্র সংসদ এখন কোনও দায়িত্বেই নেই তার হাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ এত টাকা দিল কি করে? এত অর্থের জোগান এলই বা কোথা থেকে? শোনা যায় কলেজ ফেস্টের পাস নাকি অনেকে পয়সা দিয়ে কিনেছে। এই অফুরন্ত অর্থের জোগানের পিছনে কি দাদাগিরিই মূল উত্্স? নাকি রয়েছে কোনও বড় নেতা মন্ত্রীর হাত? প্রশ্ন সবার মনে।