সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : জহর সরকার এবার কি করবেন ! তিনি কি পদত্যাগ করবেন রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে না কি অপেক্ষা করবেন দল তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো পদক্ষেপ করে কি না তার জন্য ! তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলীয় হোয়্যাটঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর বল এখন জহর সরকারের কোর্টে। সংবাদ মাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই অবশ্য ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে তৃণমূল। সূত্রের খবর, নতুন আর একটি হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয় যেখানে জহর সরকারকে রাখা হয়েছে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা অনুব্রত মণ্ডল ইস্যুতে মুখ খুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। পচা অংশ বাদ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আরও অভিযোগ করেছিলেন তাঁকে সংসদে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। সময় দেওয়া হয় না। জহর সরকার মুখ খোলায় বিড়ম্বনায় পড়েছিলো তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ দলীয় সাংসদ দলেরই কিছু নেতার বিরুদ্ধে, কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তা যে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলো তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দল অবশ্য জহর সরকারের মন্তব্যকে ভালো চোখে দেখেনি। দলের পক্ষে বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় প্রথম মুখ খোলেন। জহর সরকারকে সুবিধাবাদী বলে দেগে দেন তিনি। এরপর জহর সরকারের নির্বাচনী এজেন্ট বিধায়ক তাপস রায়ও প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দেন জহর সরকার যেন দলীয় সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন। দলের অবস্থান বুঝে জহর সরকার অবশ্য ঘনিষ্ট মহলে বলেন, দলনেত্রী বললেই তিনি পদত্যাগ করবেন। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন না। তবে দলের অধিকাংশ নেতাই মনে করছেন জহর সরকারের মন্তব্য দলের পক্ষে অস্বস্তিকর। পাশাপাশি তাদের আরও বক্তব্য, সংসদে বেশি সময় না পাওয়ার যে অভিযোগ জহর সরকার করেছেন তা একদমই ভিত্তিহীন। বরং রাজ্যসভায় প্রথমবার নির্বাচিত হলেও তাঁকে যথেষ্ট বেশি সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদদের যে হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। শনিবার সকালে যখন গ্রুপটি পুনরায় খোলা হয় তখন দেখা যায় সেখান থেকে জহর সরকার কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য দিনের শেষে নতুন একটা গ্রুপ তৈরি করে সেখানে জহর সরকারকে রাখলেও ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দল সূত্রে খবর, দলের পক্ষ থেকে জহর সরকারকে যে ইঙ্গিত দেওয়ার ছিলো সেই ইঙ্গিত পরিষ্কার দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি দলে থাকবেন না পদত্যাগ করবেন সেটা তাঁর সিদ্ধান্ত। জহর সরকারের অতীত স্ট্যাটাসের কথা মাথায় রেখে তাঁকে দল থেকে বহিস্কার বা সাসপেন্ড করার পথে আপাতত হাঁটতে চায় না দল। দল চাইছে জহর সরকার নিজে থেকেই বেড়িয়ে যান। তাতে সাপও মরবে অথচ লাঠিও ভাঙবে না। যা দুই পক্ষের কাছেই হবে সম্মানজনক। এই পরিস্থিতিতে জহর সরকার কি করেন সেটাই এখন দেখার।