Date : 2024-05-03

রাজ্যে মোদীর আগমন!খবর শুনেই ৫৬ দিনে গ্রেফতার শেখ শাহজাহান বলছে বিজেপি। পুলিশ বলছে আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল।

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়,সাংবাদিক : দক্ষিণ ২৪ পরগনার মিনাখার বামন পুকুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার সন্দেশখালীর ত্রাস শেখ শাহজাহানকের। গত ৫ই জানুয়ারি রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশ খালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয় ইডি তিন আধিকারিক বলে অভিযোগ।

ইডি আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় সন্দেশখালি জুড়ে। এবং একের পর এক অভিযোগ উঠে আসে শেখ শাহজাহান এবং তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। মহিলাদের ওপর নির্যাতন থেকে শুরু করে ভেরি দখল ,জমি দখলের মতন একাধিক মারাত্মক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।

শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে আক্রান্ত হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে কয়েক শো মানুষ জড়ো হয়ে তদন্তকারীদের উপর চড়াও হয়। এর মাঝেই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, চাযের জমি দখল করে ভেড়ি বানানোর মতো অভিযোগ উঠেছে। অথচ প্রায় দুমাস ধরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। শাহজাহানকে গ্রেপ্তারিতে এত অনীহা কেন, বার বার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। শেষপর্যন্ত গ্রেপ্তারিতে দেরি নিয়ে আদালতকেই ‘কাঠগড়া’য় তুললেন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার।রাজ্য পুলিশ কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থার সিবিআই এবং ইডি সন্দেশখালি বেতাজ বাদশা শেখ শাহাজানে গ্রেপ্তারে কোন বাধা রইল না স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ।।তদন্তে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। ৭ ফেব্রুয়ারির অন্তর্বর্তকালীন স্থগিতাদেশের রায় সংশোধন করে প্রধান বিচারপতি বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন তদন্তে স্থগিতাদেশ থাকলেও গ্রেফতারির তে কোনো স্থগিতাদেশ নেই।

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে কোনো বাধা নেই পুলিশের। অথচ ইডি সিটের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রেখেছে রাজ্যের শীর্ষ আদালত। যার জন্য পুলিশ কোনো কাজ করতে পারছে না। সেই নির্দেশের সংশোধন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।

রাজ্যের অ্যাডভোকট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন গ্রেফতার তদন্তেরই একটা অংশ। ফলত তদন্তে স্থগিতাদেশ মানেই কাওকে গ্রেফতার করা যায় না।প্রধান বিচারপতি রাজ্যের উদ্দেশ্যে বলেন,আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি শাহজাহানের গ্রেফতারির কোনো স্থগিতাদেশ নেই। কোনো একজন জন প্রতিনিধি বলেছেন আদালত গ্রেফতারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। আদালত পরিষ্কার জানিয়েছে তদন্তে স্থগিতাদেশ থাকতে পারে কিন্তু গ্রেফতারির তে নিষেধাজ্ঞা নেই।

ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী জানিয়েছেন পুলিশ যদি তদন্ত করে তবে সমস্ত নথি নষ্ট করার সম্ভবনা আছে।বিজেপির পক্ষের আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত জানায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি সন্দেশ খালি তে গিয়েছিলেন। জাতীয় সিডিউল ট্রাইব কমিশনের হয়ে তিনিও শতপ্রণোদিত মামলায় আদালতে রিপোর্ট জমা করতে পারবেন।

অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল এস ভি রাজু জানান, রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করলে আমাদের তদন্তে সমস্যা হতে পারে। তাই আমাদের আবেদন সিবিআই কে তদন্ত ভার দেওয়া হক।প্রধান বিচারপতি বলেন আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি। সেদিনই তদন্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারী প্রসঙ্গে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত প্রশ্ন তোলেন সিবিআই কেন? ইডির কি ক্ষমতা নেই তাঁকে ধরতে পারে?

প্রধান বিচারপতি রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল এর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন,যাঁকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে তিনি একজন জন প্রতিনিধি। তিনি বর্তমানে ফেরার হয়ে আছেন। এতে সাধারণ মানুষের কি ধারণা হবে?
সন্দেশখালি বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহান গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই ন্যাজাট এলাকায় প্রায় একাধিক জায়গায় আগামী তেসরা মাঠ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।