শাহিনা ইয়াসমিন, রিপোর্টার : দুবছর বন্দিদশা কাটার পর স্বাধীন জীবন পেল রকি ও টাইসন। এত বছর খাঁচার ছোট্ট দমবন্ধকর পরিসরে দিনযাপন করছিল তারা। অন্য আশ্রয়ে গিয়ে মুক্তির স্বাদ পেল রকি ও টাইসন।
টানা দুবছর খাঁচাবন্দি থাকায় মানসিক অবসাদে ভুগছিল ওরা। পাশাপাশি খাঁচার ভিতরে মনমরা হয়ে বসে থাকত। খাওয়া-দাওয়া লাটে উঠেছিল। কথা বলছি দুটি কুকুরের। ডোবারম্যান রকি ও রটওয়াইলার টাইসন। মানসিক অবসাদে ভুগছিল তারা। রকি ও টাইসনের বন্দিদশার অবসান হল বুধবার। তারা নতুন বাড়িতে গিয়ে বেশ ভালো আছে। প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীনস্থ দ্য ক্যালকাটা সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমালস বা সিএসপিসিএ সঙ্গে যোগাযোগ করে মুকুন্দপুরের এক পশু সংস্থা। এখন তারা সেখানে স্বাধীন জীবনের স্বাদ নিচ্ছে। রকিরা কেন খাঁচাবন্দি ছিল দুবছর ধরে ? তার জন্য একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হবে। ঘটনাটি ২০১৯ সালে ২৯ নভেম্বরের। ট্যাংরার মথুরবাবু লেনের বাসিন্দা জয়দেব দাস। তার বাড়িতে হানা দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মাদক পাচারের। বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরায় পুলিশকে দেখতে পেয়ে জয়দেব ও তার স্ত্রী দুই পোষ্য রকি ও টাইসনকে ছেড়ে দেন।
পুলিশ বাড়িতে ঢুকতেই রকি স্কোয়াডের এক কনস্টেবলের হাত কামড়ে দেয়। পুলিশকে কাজে বাধা দেওয়া ও তাদের উপর কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে জয়দেব ও তার স্ত্রী এখন জেল হেফাজতে। বাড়ির সদস্যদের গ্রেফতার করার পরে পোষ্য দুটিকে অন্যত্র রাখার জন্য
পুরসভার ডগ স্কোয়াডে আবেদন জানায় ট্যাংরা থানা। পুরসভা জানিয়ে দেয় তাদের পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। কুকুর দুটির ভরণপোষণের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শিয়ালদহ আদালতের নির্দেশে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীনস্থ “দ্য ক্যালকাটা সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমালস ‘ বা সিএসপিসিএ এর তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। গত দুবছর ধরে খাঁচাবন্দি ছিল রকি ও টাইসন। বুধবার ২৪ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে রকি ও টাইসন।
বুধবার সকালে রকি ও টাইসনকে বিশেষ গাড়ি করে নতুন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সময় চোখে জল চলে আসে সিএসপিসিএ-র সচিব ডা. সমীর শীলের। তিনি জানান মালিকের কৃতকর্মের জন্যই যেন সাজা পেল এই দুই পোষ্য। অবলা প্রাণীর যন্ত্রণা কে আর বুঝেছে।