Date : 2024-04-27

পাহাড়ে নির্বাচন হচ্ছেই। সর্বদলীয় বৈঠকে জানালো রাজ্য।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক: জুন মাসেই জিটিএ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য। মঙ্গলবার দার্জিলিং এর জেলাশাসক এর দফতরে জেলাশাসক এস পোনামবালাম এর উপস্থিতিতে হ‌ওয়া সর্বদলীয় বৈঠকে রাজ্যের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল কমিশনার অজিত রঞ্জন বর্ধন। তিনি জানান, ২৬ জুন হবে নির্বাচন আর ফল প্রকাশ করা হবে ২৯ জুন। সরকারিভাবে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে ২৭ মে তারিখে। যদিও এখনো পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন না করার দাবিতে অনড় জিএন‌এল‌এফ সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

মার্চ মাসে দার্জিলিং সফরকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জানতে চেয়েছিলেন জিটিএ নির্বাচন নিয়ে তাদের মত কি। তিনি বলেছিলেন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত লিখিত আকারে রাজ্যকে জানাক। সেই সঙ্গে তিনি এটাও বলেছিলেন, রাজ্য সরকার মে, জুন পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন করতে চায়। জিটিএ-র নির্বাচন না করলে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ সঠিক পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচন‌ও বকেয়া হয়ে আছে ২০১৫ সাল থেকে। মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরের পর থেকেই রাজ্য সরকার এই দুই নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের মনোভাব রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েও দেওয়া হয়। এদিকে ইতিমধ্যেই জিটিএ-র নির্বাচন পরিচালনার জন্য দার্জিলিং, কার্শিয়ং ও কালিম্পং এর মহকুমা শাসককে আরটিও হিসাবে নিয়োগ করার পাশাপাশি ৬০ জন সহকারী আরটিও ও নিয়োগ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দার্জিলিং এর জেলাশাসক এর দফতরে সর্বদলীয় বৈঠকে পাহাড়ের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল‌ই উপস্থিত ছিলো। সূত্রের খবর, তাদের বেশিরভাগই জিটিএ নির্বাচনের পক্ষে মত দেয়। যদিও ‘জিএন‌এল‌এফ’, ‘বিজেপি’ বা ‘সিপিআর‌এম’ এর কোনো প্রতিনিধি মঙ্গলবারের বৈঠকে ছিলো না বলেই খবর। ‘গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা’ নেতা বিমল গুরুং দিনকয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী কে চিঠি লিখে জিটিএ নির্বাচন না করানোর দাবি জানালেও আজকের বৈঠকে তাদের প্রতিনিধি ছিলো বলেই খবর। অতি সম্প্রতি দার্জিলিং পুরসভায় জয়লাভ করা অজয় এড‌ওয়ার্ডের ‘হামরো পার্টি’, হরকাবাহাদুর ছেত্রীর ‘জন আন্দোলন পার্টি’, ‘তৃণমূল কংগ্রেস (পাহাড়)’, ‘সিপিআইএম’ প্রভৃতি রাজনৈতিক দল বৈঠকে উপস্থিত ছিলো।

প্রসঙ্গত ৪৫ আসন বিশিষ্ট গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর প্রথম নির্বাচন হয় ২০১২ সালে। কিন্তু পাহাড়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০১৭ সাল থেকে আর এই নির্বাচন করা সম্ভব হয় নি রাজ্য সরকারের পক্ষে। যেহেতু সম্প্রতি দার্জিলিং পুরসভার নির্বাচন ভালোভাবে করা সম্ভব হয়েছে, তাই এবার জিটিএ-র নির্বাচন‌ও ভালোভাবে উতরে যাবে বলেই মত রাজ্য প্রশাসনের। তবে কয়েকটি দলের আপত্তিকে গ্রাহ্য না করলেও কোনোরকম অসতর্ক হতেও রাজি নয় রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার‌ই এই বিষয় নিয়ে দার্জিলিং, কালিম্পং এর জেলাশাসকদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা। নবান্ন সূত্রে খবর, জিটিএ নির্বাচনের সময় একসঙ্গেই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচন‌ও করে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। বুধবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকা। সম্ভবতঃ ২৬ বা ২৭ মে দুটি নির্বাচন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি একসঙ্গেই জারি করা হতে পারে।