Date : 2024-04-30

কোভিড মোকাবিলায় প্রস্তুতি সেরে রাখছে রাজ্য। মুখ্যসচিবের নির্দেশ সব জেলা প্রশাসনকে

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : বিশ্বজুড়ে ফের চোখ রাঙাতে শুরু করেছে কোভিড। বলা ভালো, কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট আশঙ্কা জাগাচ্ছে বিশ্ববাসীর মনে। এমন অবস্থায় রাজ্যের প্রস্তুতিতে কোনো খামতি রাখতে চায় না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টের কথা মাথায় রেখে মুখ্যসচিব সতর্ক করেছেন সবাইকে। কোথাও কোনো কোভিড রোগির শরীরে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিললে তা তৎক্ষণাৎ নবান্ন ও স্বাস্থ্য ভবনের গোচরে আনতে হবে। এবং সংশ্লিষ্ট রোগীর ট্রাকিং এর ব্যবস্থা সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। সেই সূত্রেই বুধবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।

রবীন্দ্রনাথের ছোটো গল্পের ট্যাগ লাইন ছিলো “শেষ হয়েও হ‌ইলো না শেষ।” কোভিডের অবস্থাও যেন কতকটা তেমন‌ই। সংক্রমণ শেষ হয়েও যেন শেষ হতে চাইছে না। চিনের যে ছবি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বা ওখানকার যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় কেন্দ্র সরকার‌ও রাজ্যগুলোকে সতর্ক করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়া একদফা বৈঠক করেছেন সব রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রীদের সঙ্গে। বুধবার নবান্ন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। রাজ্য স্বাস্থ্য সচিব সহ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক, সব জেলাশাসক, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। নবান্ন সূত্রে খবর, করোনা মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতি হিসাবে টেস্টিং ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। যে সব বিষয়গুলি দেখে রাখতে হবে-
১) জেলা হাসপাতালগুলোতে কোভিড ওয়ার্ড ও কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা শনাক্ত করণের কাজ সেরে রাখতে হবে,
২) কোভিড রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটর ও অন্যান্য সামগ্রী মজুত করে রাখা,
৩) হাসপাতালে অথবা নির্দিষ্ট স্থানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, অক্সিজেন প্লান্ট ইত্যাদির অবস্থান নিশ্চিত করা,
৪) কোভিড চিহ্নিতকরণ এর জন্য আরটিপিসিআর কিট (RT-PCR Kit) বা র্যাট কিট (RAT Kit) এর স্টক দেখে নেওয়া,
৫) প্রয়োজনীয় ওষুধ, পিপিই কিট
৬) সমস্ত ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা।
পাশাপাশি সারি (SARI) রোগের বিষয়েও সতর্ক নজর রাখতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর সরকারি পোর্টালে তার তথ্য আপলোড করতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোভিডের জন্য প্রস্তুতির মধ্যে অন্য রোগীদের যাতে চিকিৎসায় কোনো খামতি না থাকে সেটাও নজরে রাখতে হবে, যদি কোন‌ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত কোভিড ওয়ার্ড এখনো না হয়ে থাকে তাহলে পূর্ত দফতরকে দিয়ে সেই কাজ শীঘ্রই শেষ করতে হবে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। পাশাপাশি যেটা জানা যাচ্ছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজ্যে অতিরিক্ত সাড়ে তিন হাজার শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।