Date : 2024-04-27

কেন বিজেপিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু? বিস্ফোরক জয়প্রকাশ

সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, কিন্তু কেন ঠিক কি কারণে বিজেপিতে যান তিনি? এই প্রসঙ্গে সরব হলেন তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার

তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে শনিবার যে সিবিআই ডেকেছিল তা একদিনের কম নোটিশে। সেখানে তাকে কতটা জিজ্ঞেসাবাদ আর কতটা বসিয়ে রাখা হল সেটা জানা না থাকলেও আদতে তা ছিল নিষ্ফলা। শুভেন্দু এর পরে যা যা বলেছেন উনি আইন বা তদন্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় দলে থাকার সুবিধা নিচ্ছেন। সবাইকে জানতে হবে কি অঙ্গীকারে তিনি বিজেপিতে যান।”

জয়প্রকাশ বলেন ” মেদিনীপুর কলেজের সভায় শাহি সভায় যোগ দান করেন এই বলে যে টিএমসিতে কর্মীরা সম্মান পাচ্ছেন না এবং তার করোনা হয়েছিল দল থেকে কেউ খোঁজ নেয়নি তবে অমিত শাহ নাকি খবর নিয়েছিলেন। একটা চিঠি লিখে বলেন দলই উঠে যাবে। দল আপনাদের চিন্তা করে না আপনারা দল ছেড়ে দিন।

তিনি জানান “২০২০ তে ১ মার্চ এসেছিলেন অমিত শাহ। বামেরা সেদিন সিএএর বিরুদ্ধে সভা করেন। তারপর তার অক্টোবরে আসার কথা হলেও বাতিল হয়। তারপর নভেম্বরের ৫-৬ তারিখে আসেন। সেখানেই এক হোটেলে আমিও ছিলাম। বেশ রাতে শুভেন্দু আসেন। সেখানেই যোগদানের শর্ত ঠিক হয়।

তার বক্তব্য “মুকুল রায় ২০১৫ তে সিবিআই জেরার পরেই বেসুরো। আমার বাড়িতেও আসেন বিজেপিতে আসতে চেয়ে। দিলীপ ঘোষরা মুকুলকে নিয়ে অনিচ্ছা দেখান। ২০১৭ নাগাদ কৈলাশের আসার পর যোগদান ঠিক হয় তার আগে তার নামে সারদা নারদা নিয়ে সব তদন্তে জল ঢেলে দেওয়া হয়। সেই ফাইল এখন কোথায় কে জানে! মুকুলের ওপর চাপ ছিল টিএমসি ভেঙে দেওয়ার। ২০১৬ তে নারদার টেপ আমিই প্রকাশ করেছিলাম। সেটা দিল্লি থেকে পাঠান হত। শুভেন্দুর নারদার ভিডিও প্রকাশ্যে আমিই এনেছিলাম। সেই ব্রিফিংয়ে বলা হয় নারদা নয় শুভেন্দু সারদা কাণ্ডেও যুক্ত। এটা বিজেপির অফিশিয়াল বক্তব্য”

জয়প্রকাশ আরও বলেন “৫-৬ নভেম্বর ২০২০ অমিত শাহ এসেছেন। হোটেলে মুকুল রায় কৈলাশ অরবিন্দ মেনন ছিলেন। মুকুল শুভেন্দুকে বলেন তোমার ব্যাপার ঠিক গেছে। বলা হয় আপকো ডরনেকা কুছ নেহি হ্যায়, অমিতজি হ্যায় না। নারদা সারদা ইডি সিবিআই থেকে মুক্ত করা হবে। শুভেন্দু লিস্ট দেন ৭০ এমএলএ দল ছেড়ে আসবেন। এর পরেই ২৭ নভেম্বর মন্ত্রীসভার ইস্তফা শুভেন্দুর। তারপর ১৬ ডিসেম্বর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা এবং ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগদান। তার নাম সিবিআই জানে সারদা নারদায়। এফআইআরে নাম আছে। কত অকাট্য প্রমাণ তবুও তাকে ডাকা হল না। ফিরহাদ মদন সুব্রতদের গ্রেফতারও করা হয়। বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইডি সিবিআইকে ব্যবহার করছে”।

তার অভিযোগ “২০১৯ সালে স্বস্তিকা আরএসএস মুখপাত্র তারা সাবধান করে যে আমরা জানতে পারছি এরকম কিছু মানুষকে দলে নেওয়া হবে।সেখানে মুকুলকে নেওয়ার ব্যাপারে তাদের বিরুপ প্রতিক্রিয়া জানায়। এছাড়া শুভেন্দু এবং শোভনের বিষয়েও বলে।
শুভেন্দুর যোগদানের আগে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ও না বলেন। তিনি দিলীপ ঘোষের বন্ধু। কিন্তু দল থেকেই সুব্রতকে সরিয়ে শুভেন্দুকে আনার ব্যবস্থা করা হয়।
২০২১ জানুয়ারিতে আরও এক মিটিং তখন প্রার্থী নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শুভেন্দু এক মিটিংয়ে আসেন এবং বলেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? অমিত শাহের সামনে এটা বলে উদ্দেশ্য করেন কৈলাশকে। শাহ কিছু ক্ষন চুপ করে স্বপন দাশগুপ্তকে বলেন এখানে অনেক কাবিল আদমি আছে। এটা অমিত শাহ খুব ইংগিতপূর্ণ বক্তব্য ছিল। শুভেন্দুর উদ্দেশ্য ছিল মামলা থেকে রক্ষা পাওয়া একদিনের জন্য হলেও যেন জেলে যেতে না হয়। আর ছিল লোভ। তাই বিজেপিতে একটা কথা ওঠে এবিলিটি ক্রেডিবিলিটি ট্রাস্টেবিলিটি- শুভেন্দুর এই ৩ জিনিসই নেই, আরএসএসের এক নেতাই বলেন। যারা তদন্ত করছেন তাদের বলি ভারতে কিন্তু মানুষ দেখে মানুষ জানে। ইডি সিবিআই আমার হাতে এসব বলে লাভ নেই। শুভেন্দুর দূনীতি আজ না হোক কাল সামনে আসবেই।”