Date : 2024-04-29

106 রানে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজে সমতা ফেরালো ভারত

ভাইজাগে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে নিল ভারত। 106 রানে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজে সমতা ফেরালো ভারত। সিরিজ এখন 1-1। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় 292 রানে। যেভাবে বাজবল টেকনিকে খেলছিলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা এক সময় দেখে মনে হচ্ছিল ম্যাচ হয়ত হাতে বাইরেও চলে যেতে পারে ভারতের। কিন্তু অভিজ্ঞতাতেই বাজিমাত করলেন অশ্বিন, বুমরাহ। প্রথম ইনিংসে 6 উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও 3 উইকেট নিলেন বুমরাহ। ম্যাচে 9 উইকেট নেওয়া হয়ে গেল তাঁর। একটু স্পোর্টিং উইকেট হলে, খেলা যেমন উচ্চমানের হয় তেমন ব্যাটার বোলার উভয় বিভাগেই সুবিধা পাওয়া যায়। পিচ স্পোর্টিং হলে ম্যাচের চতুর্থ দিনের পরেও খেলা ফিফটি ফিফটি থাকে, সেটাই বুঝিয়ে দিল ভাইজাগের পিচ। দঃ আফ্রিকায় যেমন পিচ ছিল বা ভারতের কিছু মাঠে যেমন অতিরিক্ত স্পিন সহায়ক উইকেট করা হয়, তাদেরকেই শিক্ষা দিয়ে গেল ভাইজাগের এই উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিন নিলেন তিন উইকেট। ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারকে কার্যত একাই শেষ করে দেন অশ্বিন। ওপেনার বেন ডাকেটকে আগের দিনই সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। এরপর ওলি পোপ এবং জো রুট, দুই সেরা তারকাকে সাজঘরে দ্রুত ফিরিয়ে দেন অশ্বিন। আর তাতেই খেলা ভারতের আয়ত্তে চলে আসে অনেকটা। যদিও বাজবল টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। কারণ ওলি পোপ, বেন ডাকেট বা জো রুট, প্রত্যেকেই যারা অশ্বিনের বলে আউট হলেন তাদের স্ট্রাইক রেট 100-র বেশি ছিল। অর্থাৎ অ্যাটাক করতে গিয়েই তারা উইকেট খোয়ান। টেস্ট খেলার জন্য যে হিমশিতল মানসিকতা ক্রিকেটারদের দরকার, সেটাই আর হয়ত থাকছে না বাজবলের বদান্যতায়। কারণ টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে বড় রান তাড়া করতে গেলে প্রথম প্রয়োজন ছিল হাতে অনেকটা সময়। সেটা ইংল্যান্ডের কাছে যথেষ্টই ছিল। আর দ্বিতীয় প্রয়োজনিয় বিষয় ছিল উইকেট। সেটাও ছিল হাতে। কিন্তু দ্রুত রান তুলতে গিয়ে একের পর এক উইকেট খোয়ালেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা। টেস্ট ম্যাচ জিততে গেলে স্রেফ হার্ড হিট করতে হবে, এমন তো কোথাও লেখা নেই। বর্তমান ইংল্যান্ড দলের বহু ক্রিকেটারের থেকেই এক কালে ভারতের বীরেন্দ্র সেহওয়াগের স্ট্রাইক রেট এবং সাকসেস রেট উভয়ই বেশি ছিল। এমনকি ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, যার মস্তিস্ক প্রসুত এই বাজবল টেকনিক, তার থেকেও সেহওয়াগ ব্যাটিংয়ে সব বিষয়েই অনেকটা এগিয়ে ছিলেন। টেস্টে বাজের থেকে গড় এবং স্ট্রাইক, উভয়ই বেশি ছিল বিরুর। ওডিআইয়ের ক্ষেত্রেও বিষয়টা এক। গড় এবং স্ট্রাইক রেট, দুই বিভাগেই এগিয়ে ছিলেন বিরু। সেই সঙ্গে প্রচুর ম্যাচ জিতিয়েছেন একার কাঁধেই। তা পাকিস্তান, দঃ আফ্রিকা হোক বা অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা। তিনি দলের প্রয়োজন অনুযায়ী নিজের নীতিতে খেলতেন। অথচ এখন বাজবল নীতি প্রয়োগ করতে গিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকেই যে বিপদে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। কারণ টি20-র যুগে এমনিতেই টেস্টে মানুষের ঝোঁক কমেছে। বহু ক্রিকেটারই টেস্ট থেকে অবসর নিয়ে মনোননিবেশ করছেন সাদা বলের ক্রিকেটে। পাঁচ দিনের ম্যাচ খেলার জন্য যে ফিটনেস দরকার, এখনকার দিনের ক্রিকেটারদের মধ্যে এমনিতেই তা অমিল। এর মধ্যে যদি জো রুটের মতো টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটারকেও আক্রমনাত্মক নীতি প্রয়োগ করতে হয়, তাহলে যে আখেরে টেস্ট ক্রিকেটেরই ক্ষতি তা বলাই যায়। দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের কথায় যদি আশা যায়, তাহলে চিন্তা থেকেই গেল মিডল অর্ডার নিয়ে। যশস্বী, গিল ছাড়া বড় রানের দেখা তো পেলেন না অন্যান্যরা কেউই। বোলিংয়ে বুমরার ফর্মে ফেরা নিঃসন্দেহে ভারতকে তৃতীয় টেস্টের আগে স্বস্তিতে রাখবে। দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র 91 রান দিয়ে 9 উইকেট নিয়ে তিনিই সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেন। দুরন্ত পারফরমেন্স তিনি বল হাতে না করলে হয়ত যশস্বী জয়সওয়ালই এই পুরস্কারটা পেতেন। তৃতীয় টেস্টের আগে হাতে অনেকটা সময় থাকছে দুই দলের। সৌরাষ্ট্রে তৃতীয় টেস্ট শুরু হবে 15ই ফেব্রুয়ারি। শেষ টেস্টে বিরাট কোহলি ফিরলে দলের ব্যাটিং লাইন আপে ভারসাম্য আসবে, আপাতত তার অপেক্ষাতেই টিম ম্যানেজমেন্ট।