Date : 2024-04-26

বস্তিবাসী এই ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন আয়েশা নুর ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে পাড়ি দিতে চলেছে থাইল্যান্ড…

ওয়েব ডেস্ক: আট বছর আগে সে হারিয়েছে নিজের বাবাকে। জন্ম থেকেই মৃগিরোগে আক্রান্ত। বাড়িতে মানুষ বলতে সে আর তার মা। মা শালকিয়া বেগম তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর অন্নসংস্থানের একমাত্র উপায় সেলাই করা। কলকাতার বস্তিতে বাড়ি তাঁদের।

তবে কোনও কিছুই পিছনে ফেলে রাখতে পারেনি আয়েশাকে। এই বছর ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্দেশ্যে ২১ বছর বয়সী আয়েশা নুর ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে পাড়ি দিতে চলেছে থাইল্যান্ডে।

আয়েশার এই পথ সোজা ছিল না। কেবলমাত্র সবসময়ে সঙ্গে ছিল তাঁর কোচ এম.এ. আলি। যিনি আয়েশাকে বেনিয়াকুপুর থেকে কলকাতায় এনে দিনের পর দিন একটুও ধৈর্য না হারিয়ে ক্যারাটের জন্য প্রস্তুত করে গেছে।

আসলে তাঁর শিক্ষাগুরু প্রথমদিন থেকেই বুঝেছিলেন যে আয়েশা কোনও সাধারণ একজন ক্যারাটে কিড নয়। এই কথাটিকেই সত্যি প্রমাণ করে সে। ২০১০ সালে মুম্বাই, ২০১৩ ও ২০১৫ সালে ব্যাঙ্ককে সে তিনবার সোনা জেতে ভারতের হয়ে খেলে।

২০১৭ সালে ইউনাইটেড স্টেটস অর্থাৎ আমেরিকা থেকে আমেরিকা সেন্টারে নিউদিল্লিতে আয়েশাকে দিয়েছে “হিরো অফ জেন্ডার ইকুয়ালিটি”র তকমা।

এখানেই শেষ নয়, এই বছর ৭ই জুন, টাইমস অফ ইন্ডিয়া থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে আয়েশাকে, “টাইমস ওমেন হিরোস অ্যাওয়ার্ড”এর। আয়েশার জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ডকুমেন্টারিও।

যা তৈরি করেছে ইন্টারন্যাশানাল টেলিভিশন সিরিজ, নাম গার্ল কানেক্ট। এটি পরে দুরদর্শনের মাধ্যমে সারা বিশ্বে সম্প্রচারও হয়েছিল। আয়েশা এখন ১০০ জন মেয়েকে বিনামূল্যে ক্যারাটে শেখায়।

এমন একটি উদ্যোগের একটাই কারণ। যেন আজকালকার মেয়েরা কারোর ভয়ে পিছিয়ে না থাকে, তারা যেন নিজেরাই হয়ে উঠতে পারে নিজেদের রক্ষক। বিশেষত ধর্ষণ জাতীয় বিষয়ে যেন তারা নিজেরাই নিজেদের সেই পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে পারে এটাই আশা আয়েশার।

সরকার থেকে সবরকম, বিশেষত টাকাপয়সাজনিত সাহায্যও পায় আয়েশা। এছাড়াও এই পৃথিবীতে এখনও অনেক ভালো মানুষ আছে যারা তাঁকে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করে, যাতে আয়েশার জীবনটা একটু হলেও সুন্দর হতে পারে।