Date : 2024-04-27

শিল্পায়নে জোড় রাজ্যের। নবান্নে বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সঞ্জু সুর, রিপোর্টার : তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে শিল্পায়ন‌ই এখন পাখির চোখ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গত দশবছর ধরে উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পের দিকে নজর দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতাল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পাশাপাশি রাস্তা তৈরির মতো পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করাই ছিলো মূল উদ্দেশ্য।

পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের জন্য কোষাগারের দরজা খোলাই রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেও ‘লক্ষীর ভান্ডার’ সহ বেশকিছু সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প ইতিমধ্যেই চালু করেছেন তিনি। কিন্তু এর পাশাপাশি এবার রাজ্যে নতুন শিল্প স্থাপন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে বেশি নজর দিতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি শুধু ভোটমুখি রাজনীতি করেন ও সেইদিকে তাকিয়েই সরকারি সিদ্ধান্ত নেন। এই ভাষাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে বরাবর আক্রমণ করে আসছে বিরোধীরা। এবার প্রথম থেকেই বিরোধীদের এই আক্রমণের জবাব দিতে শিল্পায়নকেই হাতিয়ার করতে চায় রাজ্য সরকার।
সম্প্রতি ১ সেপ্টেম্বর পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে একটি বেসরকারি সংস্থার কারখানার শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “আগামি দিনে দেশের শিল্প মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গ কে আবার এক নম্বর স্থানে নিয়ে যাওয়াই তাঁরর লক্ষ্য।” সেই লক্ষেই তিনি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন বোর্ড’ গঠনের কথাও বলেছিলেন। বুধবার সেই বোর্ডের ই প্রথম বৈঠক হলো নবান্নে। বৈঠকে পৌরহিত্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।
বৈঠক শেষে রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানান।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইথানল প্রমোশন পলিসি গৃহীত হয়েছিল। মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে এই ক্ষেত্রে ১৫ টি বিনিয়োগের প্রস্তাব রাজ্যের কাছে এসেছে বলে জানান মুখ্য সচিব। এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হবে প্রায় ২,৬৬৬ কোটি টাকা। এই জন্য আলাদা একটি শিল্পতালুক তৈরি হবে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তিনি আরো জানান, উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে ওএনজিসি প্রায় ১২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। উত্তর ২৪ পরগনার পাশাপাশি হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরে আরো তিনটে তেল সন্ধান প্রকল্পের কাজ চালানোর জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।

মুখ্য সচিব আরো বলেন, রাজ্যে ডিমের চাহিদা মেটানোর জন্য ২৫০০ কোটি টাকা খরচ করে পোল্ট্রি ফার্মের উন্নতি ঘটানো হবে। যেখানে প্রচুর নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি আজকের প্রথম বৈঠকেই আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। রাজ্যে ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে আবশ্যিক শর্ত সংখ্যা কমানো হচ্ছে। ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’-কে আরো সক্রিয় করে তোলা হবে। পাশাপাশি দ্রুত শিল্পায়নের লক্ষ্যে কি কি ক্ষেত্রে আরো শিথিল বা সরলীকরণ করা যায় তা দেখার জন্য মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যে কমিটিতে শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন দপ্তরের সচিব ও ডাবলুবিআইডিসি-র চেয়ারম্যান ও রয়েছেন।