Date : 2024-04-26

Sasaram railway station : পড়ুয়াদের ক্লাস সাসারাম রেলস্টেশনে

পৌষালী সেনগুপ্ত, নিউজ ডেস্ক : ছোটবেলায় আমরা সকলেই বিদ্যাসগরর গল্প পড়েছি। পড়েছি কতটা কষ্ট করে রাস্তার আলোতে তিনি পড়াশোনা করতেন। কিন্তু এই সময় আমাদের সমাজে সেই বিদ্যাসাগর আজও বর্তমান। তবে সেই বিদ্যাসগরকে যেভাবে কষ্ট করতে হয়েছিল আজকের বিদ্যাসাগরদের ঠিক ততটা কষ্ট করতে হয়না। এই বিদ্যাসাগররা প্রতিদিন পড়াশোনা করেন ঝাঁ চকচকে রেলওয়ে স্টেশনে।এঁদের জন্য রয়েছে সেখানে চারদিকে রয়েছে উজ্জ্বল আলো। এঁরা পড়াশোনা করেন দল বেঁধে। একে অন্যের সঙ্গে নোট্‌স বিনিময় করেন। এঁরাও বাড়ি ছেড়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে রেলস্টেশনে নিয়মিত পড়াশোনা করতে আসেন আলোর অভাবে।তাঁরা বিহারের সাসারাম রেলস্টেশন রাতে আলো পান ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত। আর পান অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পড়াশোনার সুযোগ।এঁদের পড়ানোর জন্য রয়েছেন এক ঝাঁক দক্ষ শিক্ষকও।যাঁরা নিয়মিত এসে এই পড়ুয়াদের পড়িয়ে যান।সাসারাম রেলস্টেশনের এই পড়ুয়াদের বেশির ভাগই আসেন ১৯ কিলোমিটার দূরের রোহতাসের কয়েকটি গ্রাম থেকে।

মাওবাদী সন্ত্রাসে সব সময়ই ভয়ে থরথর করে কাঁপে রোহতাসের গ্রামগুলি।তাঁদের এক ও একমাত্র লক্ষ্য হয়ে ওঠে সরকারি চাকরি।আমলার চাকরি। আইএএস, আইপিএসের চাকরি। তাই সাসারাম রেলস্টেশনের পড়ুয়ারা প্রস্তুতি নেন সর্বভারতীয় স্তরের আইএএস, আইপিএস, আইএফএস এবং রাজ্যস্তরের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষাগুলির জন্য।তবে মজার বিষয় হল ট্রেন থামলে যাত্রীরাও তা দেখে বেশি হইচই করেন না। তাতে যদি পড়ুয়াদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে।রোজ সকালে ও সন্ধ্যায় ২ ঘণ্টা করে চলে সেই কোচিং ক্লাস। সাসারাম রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই পড়ানো হয় ইংরেজি, হিন্দি-সহ বিভিন্ন ভাষা, গণিত, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও রিজনিং।দিনে-রাতের দু’ঘণ্টার কোচিং ক্লাস ছাড়াও দিনভর রাতভর সাসারাম রেলস্টেশনে বসে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিতে ৫০০ পড়ুয়ার জন্য আলাদা পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছেন সাসারাম রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ। যাতে স্টেশনে ঢুকতে বা সেখান থেকে বেরোতে তাঁদের কোনও অসুবিধা না হয়।এককথায় তারা পড়াশোনা করেন আর তাদের উন্নতির জন্য স্টেশন থেকে সাধারণ মানুষ সকলের সাহায্যেই ধীরে ধীরে এই পড়ুয়ারা এগিয়ে যাচ্ছে তাদের লক্ষ্যের দিকে।