Date : 2024-04-26

সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ হলে কেন্দ্রীয় আইন মেনেই রাজ্যকে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক:- রাজ্য সরকারের যেকোন প্রতিষ্ঠানের জন্য যদি জমি অধিগ্রহণ করা হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই কেন্দ্রীয় আইন মেনেই দিতে হবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ।

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে যত জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে বা তার আগে অধিগ্রহণ করা হলেও, যার দাম মেটানো হয়নি ওই সময়ের মধ্যে, তাদেরকেই ২০১৩ সালের নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ সহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কোন আপত্তি করতে পারবে না। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এই নির্দেশ আগামী, দীর্ঘ দিনের জমি অধিগ্রহণ ক্ষতিপূরণ নিয়ে জটিলতা কাটার ক্ষেত্রে একটি দিশা বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

রেল বা জাতীয় সড়কের মতো কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হলে, কেন্দ্রের নতুন আইন মেনেই যাবতীয় ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একটি জমি অধিগ্রহনে ক্ষতিপূরণ নিয়ে আপত্তি মামলায় এই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। আর সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধি গ্রহনের ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়ে রাজ্যের বারে বারে নাক গলানোর সুযোগও খর্ব হবে বলেও আশা জমি দাতাদের।

প্রসঙ্গত,উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙ্গার হিসাবী ও মুর্শিদাবাদের আঁধারমানিক ও বাসুদেবখালি মৌজার অধিগৃহিত জমির মালিকরা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ, নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি জাতীয় সড়কের জন্য নেওয়া ওই জমির জন্য। এমনকি জমির যে দাম দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি জানালেও তাদের আরবিট্রেশনের জন্যও ডাকা হয়নি। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের নির্দেশ, ওই জমিদাতাদের ডেকে ছ’ মাসের মধ্যে তাদের আপত্তি শুনে সমস্যার সমাধান করতে হবে। একই সঙ্গে আদালতের আরো স্পষ্ট নির্দেশ, প্রতিটি জমিদাতার সঙ্গে কথা বলে প্রত্যেকের সমস্যার আলাদা আলাদা ভাবে সমাধান করতে হবে। গণহারে বা কয়েকজনকে নমুনা হিসেবে নিয়ে তাদের প্রতি দেওয়া নির্দেশে বাকিদের ক্ষেত্রে কার্যকর করা যাবে না। রাজ্যের কৌশলী চণ্ডীচরণ দে বলেন, আদালত যা নির্দেশ দেবে তা সরকার মেনে নেবে।

মামলাকারি জমিদাতাদের তরফে আইনজীবী অরিন্দম দাস আদালতে জানান কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি নিলেও রাজ্য যেহেতু কেন্দ্রের নতুন আইন কার্যকরের ক্ষেত্রে বিধি তৈরি করেনি, তাই এখানে তার সবকটি ধারা ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। যা নিয়ে জটিলতা দীর্ঘ দিনের। কিন্তু হাইকোর্টের এই নতুন নির্দেশে অন্তত এখন থেকে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে, তারা নতুন আইনের সব ধারা মেনেই ক্ষতিপূরণ ও সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার হিসেবে চিহ্নিত হলেন।